‘অবশ্যই এই ছবিটি নিয়ে আমি আরও লিখবো’ কটাক্ষের জবাবে ভাবনা

  • মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

(বাঁমে) গরুর এই ছবি নিয়েই সমালোচনা, অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা (ডানে)

(বাঁমে) গরুর এই ছবি নিয়েই সমালোচনা, অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা (ডানে)

ঠিক পাঁচ দিন আগে ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ছবির জন্য বাজেভাবে কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন মেধাবী অভিনয়শিল্পী আশনা হাবিব ভাবনা। একটি পিকআপ ভ্যানে দুটি গরুর ছবি পোস্ট করে ভাবনা লিখেছিলেন, ‘আমার কান্নার শব্দ কি শোনা যায় তোমার শহরে!’

এটি পোস্ট নিয়েই তার দিকে নানা ধরনের কটাক্ষে তীর আসতে থাকে। শুধু নেটিজেনদের বাজে মন্তব্য পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকেনি বিষয়টি। এ নিয়ে যখন কিছু গণমাধ্যম নেতিবাচক খবর প্রকাশ করে তখন সেই সমালোচনার জোয়ার আরও তিব্র হয়। ট্রোলাররা ছবিটির ব্যাখ্যা করে এভাবে, যেন ভাবনা গরু জবাই কিংবা গরুর মাংস খাওয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেই ছবিটি পোস্ট করেছেন।

বিজ্ঞাপন
আশনা হাবিব ভাবনা

ফলে অনেকেই ভাবনাকে হিপোক্রেট বলছেন। ভাবনা ও তার পরিবারের গরুর মাংস-প্রীতি সংক্রান্ত পুরনো ইন্টারভিউগুলো খুঁজে বের করে তারা বলছে, সে নিজেই এতোদিন গরুর মাংস খেয়ে এখন এসেছে উপদেশ দিতে। কেউ কেউ আবার বলছে, ভাবনা নিজেকে ‘পশুপ্রেমী’ প্রমাণ করতে গিয়ে নিজের কথাতেই ধরা খেয়েছেন!

প্রথমদিকে চুপ থাকলেও আজ বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভাবনা। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি মাঝে মাঝেই ছবি তুলতে পছন্দ করি। যখন কোনো দৃশ্য আমাকে ভাবতে বাধ্য করে, সেটা মাঝে মাঝে ফেসবুকেও শেয়ার করি। আমার একটি ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি পিকআপ ভ্যানে রোদে দাঁড়িয়ে একটি গরু, তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। সে দিন ছিলো তীব্র দাবদাহ, গরমে দীর্ঘ সময় থাকার ফলে অবলা প্রানীটি ভীষণ ভাবে কাঁদছিলো। বোবা প্রাণের কান্না আমাকে ছুঁয়ে যাচ্ছিল। ছবি তুলে আমার অনুভূতি প্রকাশ করি আমি। ছবিটির ক্যাপশন দিয়েছি ‘আমার কান্নার শব্দ কি শোনা যায় তোমার শহরে!’ ব্যাস এতটুকুই! তারপর কিছু মানুষ শুরু করলেন আমাকে হেয় করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখতে শুরু করলেন, আমি চামড়ার ব্যবসায়ী! আমি নিজে একটা গাভী! আমাকে লাথি মারতে মারতে ইন্ডিয়া পাঠানো উচিত! আরও কত নোংরা নোংরা কথা!”

বিজ্ঞাপন
আশনা হাবিব ভাবনা

ভাবনার ভাষ্য, ‘আমি কোথাও লিখিনি গরুর মাংস খাই না বা বলিনি আপনারা গরুর মাংস খাবেন না। একটা প্রাণীর কান্না দেখে যে কেউ কেঁদে উঠতে পারেন এটাই স্বাভাবিক। আর আমি প্রকৃতিপ্রেমী বা প্রাণীপ্রেমী কি না সেটার প্রমাণ আমি কোথাও দেবো না। আমার ফেসবুকের একটি পোস্টেই তো আর প্রমাণ হবে না আমি কে?’

সবশেষে ভাবনা লেখেন, ‘অবশ্যই এই ছবিটি নিয়ে আমি আরও লিখবো, হয়তো কোন কবিতায় বা গল্পে বা অন্য কোথাও অথবা আমার পরবর্তী ক্যানভাসে। শিল্পীর বেদনা গুরুত্বপূর্ণ, ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমার দিকে ছুড়ে দেওয়া সব তীর আমি সাদরে গ্রহণ করলাম।’

আশনা হাবিব ভাবনা

ভাবনার এই ব্যাখ্যায় কারও কারও বোধোদয় হয়েছে বটে। কিন্তু অনেকেই এখনও তার সমালোচনায় মেতে আছে। তবে তারাও বিষয়টিকে উপলব্ধি করে সহজভাবে নেবেন বলে প্রত্যাশা এই অভিনেত্রীর।