ভালো আছেন কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তরিত করা হয়েছে তাকে।
এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চিকিৎসকরা জানান, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ধীরে ধীরে অক্সিজেনর মাত্রা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। শুক্রবার তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। যদিও শ্বাসকষ্টের সমস্যা সম্পূর্ণ শেষ হয়নি।
চিকিৎসকরা আরও জানান, চিন্তামুক্ত হলেও আরও কয়েক দিন হাসপাতালেই চিকিৎসকদের নজরে থাকতে হবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে।
আরও পড়ুন: ভালো আছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে গত ১৪ আগস্ট দক্ষিণ কলকাতার ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে। সেখানেই আইসিইউতে রাখা হয়েছিল তাকে। তার জন্য গঠন করা হয়েছিল ৭ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড।
১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি কলকাতার মির্জাপুরে জন্মগ্রহণ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তার বয়স ৮৪ বছর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমহার্স্ট স্ট্রিট সিটি কলেজে সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
আরও পড়ুন: ফুসফুসের সংক্রমণ, হাসপাতালে ভর্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’-এর মধ্য দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এরপর তিনি সত্যজিৎ রায়ের ৩৪টি সিনেমার ভেতর ১৪টিতে অভিনয় করেছেন। পরবর্তীতে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মত জনপ্রিয় পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে ‘ক্ষুধিত পাষাণ’, ‘দেবী’, ‘স্বরলিপি’, ‘সমাপ্তি তিনকন্যা’, ‘আগুন’, ‘বেনারসি’, ‘অভিযান’, ‘শেষ প্রহর’, ‘চারুলতা’,‘বাক্স বদল’, ‘কাপুরুষ’, ‘কাচ কাটা হীরে’, ‘বেলাশেষে’, ‘প্রাক্তন’ উল্লেখযোগ্য।
শুধু সিনেমা নয়, অসংখ্য নাটক, যাত্রা এবং টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। অভিনয় ছাড়া তিনি নাটক ও কবিতা লিখেছেন। করেছেন পরিচালনার কাজটিও।
ভারত সরকার কর্তৃক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ২০০৪ সালে ‘পদ্ম ভূষণ’ ও ২০১২ সালে ‘দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার’ লাভ করেন। এছাড়া ২০১৭ সালে তিনি ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ‘লিজিওন অফ অনার’ লাভ করেন। একই বছর পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কার অর্জন করেন। যদিও ২০১৩ সালে তিনি একই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।