যেন আরেকটি সিনেমা!

, বিনোদন

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-26 00:56:39

ঢাকা: সারাজীবন কষ্ট করে সন্তানদের মানুষ করেছেন তিনি। সন্তানরাও প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। কিন্তু জীবনের শেষ বেলায় সেই সন্তানদের অত্যাচার আর নির্যাতনের শিকার মা। আর তার শেষ আশ্রয় হয় বৃদ্ধাশ্রমে।

সন্তানদের একটিবার দেখতে চোখের জলের অন্ত ছিলোনা মায়ের। অবশেষে সন্তানদের না দেখেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন মা। মায়ের মরদেহ পরে আছে হাসপাতালের মর্গে। সন্তানরা মায়ের মরদেহ নিবে কিনা তা নিয়ে তৈরি হয় সংশয়। অনেকেই ভাবছেন এটা হয়তো কোনো সিনেমার গল্প।

না, এটি কোনো সিনেমার গল্প নয়। এটি বলিউডের ৭০’র দশকের সহযোগি অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত গীতা কাপুরের জীবনের সত্য ঘটনা। ১৯৭২ সালে ‘পাকিজা’ সিনেমায় সহযোগী অভিনেত্রী ছিলেন গীতা কাপুর। তার অভিনয় নৈপুণ্য নজর কারে সবার। তারপর থেকে অন্তত ১০০ টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন গীতা কাপুর।

এমনই কোনো গল্পেও হয়তো অভিনয় করেছিলেন গীতা কাপুর। কিন্তু নিজের জীবনেই এমন কাহিনী যে সত্যি হয়ে আসবে তা হয়তো ভাবেননি কখনো। গীতা কাপুর এক ছেলে এক মেয়ের মা ছিলেন। ছেলে বলিউডের কোরিওগ্রাফার আর মেয়ে এয়ারহোস্টেজ।

ছেলেমেয়েরা যেখানে প্রতিষ্ঠিত, সেখানে মায়ের কোনো চিন্তা থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গীতা কাপুরের জীবনে ঘটেছে ঠিক উল্টোটা। শেষ বয়সে খাবার চাইতেই গীতা কাপুরকে ছেলের অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে। ছেলে মারধোর করেছে বেধড়ক।

মেয়ে মা’কে সাথে রাখতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন। ছেলে আর মেয়ে শেষ পর্যন্ত মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসারই পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ি কাজও করেন। বৃদ্ধাশ্রমে মাকে দেখতেও আসেনি গীতা কাপুরের সন্তানরা।

এমনকি হাসপাতালের বিল পর্যন্ত দেয়নি সন্তানেরা। অবশেষে গীতা কাপুরের হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেন প্রযোজক অশোক পন্ডিত। হাসপাতালের মর্গ থেকে গীতা কাপুরের সন্তানরা তার মরদেহ নিয়ে যাবেন কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে টুইটও করেছেন।

বৃদ্ধাশ্রমের গেটের দিকে সব সময় তাকিয়ে থাকতেন এই মা কখন তার সন্তানরা একটিবারের জন্য তাকে দেখতে আসবে। কেবলই যেন অপেক্ষা। সেই অপেক্ষা শেষ হলো গীতা কাপুরের মৃত্যুর মাধ্যমে। সন্তানদের শেষবারের জন্য দেখা হলো না তাঁর।

এ সম্পর্কিত আরও খবর