ফাঁকা, শূন্য সিনেমা হলগুলো..

, বিনোদন

মাহবুবুর রহমান সজীব | 2023-08-26 13:15:54

দ্বীপজেলা ভোলার বৃহত্তম উপজেলা চরফ্যাশন। এটি এ জেলার অন্যান্য সব থানা উপজেলা থেকে বরাবরই বেশি উন্নত। এখানকার লোকজনের সাংস্কৃতিক চর্চা ও বিকাশ যারপরনাই আধুনিক। তবুও দেশের অন্যান্য উপজেলা সদরের মতো ক্রমেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এখানকার সিনেমা হলগুলো, দর্শক শূন্যতায়।


ফ্যাশন, সাগরী ও সবুজ; চরফ্যাশনের এই তিনটি হলই দর্শকে ভরপুর থাকতো বছর পাঁচেক আগেও। বছর দশেক আগে তো টিকিটই পাওয়া যেতো না ঠিকমতো। প্রাপ্তবয়স্করা তো বটেই, স্কুলপড়ুয়া ছেলে-মেয়েরাও চলে আসতো দল বেঁধে, ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে। সেসব এখন কেবল অতীত স্মৃতি।


বাংলা সিনেমায় কাটপিস ঢুকে পড়ার সময়েও অভাব হয়নি দর্শকের। তবে ক্যাটাগরি পাল্টেছে। ময়ুরী, মুনমুনদের খুব একটা দেখতে আসতো না শিক্ষিত সমাজ। আসতো অন্যান্য পেশা-শ্রেণির লোকজন। কিন্তু সেই হলগুলোই আজকাল শূন্যতায় পড়ে থাকে।

ঘুরে দেখা যায়,

চরফ্যাশন সদরের প্রায় মাঝামাঝি যে ফ্যাশন সিনেমা হলের অবস্থান ছিলো, সেটির চিহ্ন একদমই হাওয়া। কোথায় সেই হল! পাশের এক ব্যবসায়ী আরিফ জানালেন, সিনেমা হলটি বন্ধ হয়ে এখানে ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে গত কয়েক বছর ধরেই। এ প্রজন্মের বাচ্চাদের কৌতুহল মেটাতে সেই যায়গা দেখিয়ে জানাতে হয় যে, এখানে এক সময় সিনেমা হল ছিলো।


চরফ্যাশন সদরে ঢুকতেই প্রথমে সাগরী সিনেমা হল। বহুকালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কেবল। জরাজীর্ণ ভবন, খসে পড়া পলেস্তারা, ঘুণে ধরা কাঠের জানালা; নামটাও প্রায় অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন।


এই হলেও সিনেমা চলছে না বহুদিন। এক সময়ে যে রমরমা দর্শক ছিল এবং দর্শকমনে বাংলা ছবি দেখার যে আগ্রহ ছিলো, সেসবে প্রবল ভরাডুবি হওয়ার ফলে নতুন করে অর্থ বিনিয়োগ করতে চাইছে না কতৃপক্ষ। বরং রকমারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লাভ যেহেতু বেশি, অন্তত দোকান ভাড়া দিলেও বেশ আয়, সেটাতেই বেশি মনোযোগ কতৃপক্ষের।

জানালেন,

তেমন কেউ আর সিনেমা দেখতে আসে না হলে। কেনইবা আসবে! ঘরে ঘরে বড় মনিটর। ইন্টারনেটের কল্যাণে চাইলেই যে কোনো সময় যে কোনো সিনেমা দেখে ফেলা যেতে পারে এখন। এমনকি একদম নতুন ছবিও দেখে ফেলা যায় পাইরেটেড কপির সুবাদে। মানুষের কি আর অত সময় আছে হলে এসে সিনেমা দেখার!


ঐতিহ্যবাহী সাগরী সিনেমা হল তাই কেবল ভেঙে পড়ার অপেক্ষায়। হলের নিচতলায় বানানো হচ্ছে দোকানপাট। আশপাশেও তাই। সিনেমাপাড়া হয়ে উঠছে নতুন বাণিজ্যিক এলাকা।


চলছে কেবল সবুজ সিনেমা হল। তাও ধুঁকে ধুঁকে। খুব একটা দর্শক দেখা যায়নি হলের আশপাশে। মোট তিন-চারটি করে শো চলে প্রতিদিন। যেখানে আগে চলতো অন্তত পাঁচটি শো।

এ সম্পর্কিত আরও খবর