বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতাদের তালিকায় শীর্ষেই ছিলো ইরফান খানের নাম। শুধু হিন্দি সিনেমা নয়, সদ্যপ্রয়াত এই তারকা অভিনয় করেছেন ব্রিটিশ চলচ্চিত্র ও হলিউডে।
১৯৬৭ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের জয়পুরের এক মুসলিম নবাব পরিবারে জন্ম হয় ইরফান খানের। তার আসল নাম সাহাবজাদে ইরফান আলি খান। জয়পুরেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। সেখান থেকে এম.এ ডিগ্রি শেষ করে স্কলারশিপ নিয়ে ১৯৮৪ সালে নয়াদিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা পড়তে যান।
স্নাতক সম্পন্ন করে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে ১৯৮৭ সালে মুম্বাই পা রাখেন ইরফান খান। এরপর অসংখ্য টেলিভিশন সিরিয়ালে কাজ করেছেন। এর মধ্যে উল্লখযোগ্য ‘চনাক্য’, ‘সারা জাহান হামারা’, ‘বানেগি আপনি বাত’, ‘চন্দ্রকান্তা’, ‘স্টার বেস্টসেলার’ এবং ‘স্পর্শ’।
‘ডর’ নামে একটি টেলিভিশন সিরিজে খলচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ইরফান খান। এতে একজন পাগল সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে দেখা গিয়েছিলো তাকে।
থিয়েটার ও টেলিভিশনে কাজের পর দারুণ প্রস্তাব আসে ইরফান খানের কাছে। নির্মাতা মীরা নায়ার পরিচালিত ‘সালাম বোম্বে’তে (১৯৮৮) অতিথি চরিত্রে নেওয়া হয়। ১৯৯০ সালে তাকে দেখা গেছে ‘এক ডক্টর কি মত’ এবং ‘সাচ অ্যা লং জার্নি’তে। এছাড়া সেই সময় বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনোটি সফলতার মুখ দেখেনি।
ইরফান খানের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় ‘দ্য ওয়ারিয়র’-এ কাজ করে। আসিফ কাপাডিয়া পরিচালিত ছবিটিতে তাকে প্রধান চরিত্রে দেখা যায়। ২০০১ সালে ছবিটি আন্তর্জাতিক উৎসবগুলোতে হৈচৈ ফেলে দেয়। এরপরই সবার কাছে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন ইরফান।
২০০৩ সালে ইরফান অভিনয় করেন অশ্বিন কুমারের শর্টফিল্ম ‘রোড ইন লাদাখ’-এ। এটিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে বেশ সাড়া ফেলে। একই বছর তিনি অভিনয় করেন ‘মকবুল’-এ।
৫৩ বছর বয়সী এই তারকার প্রথম বলিউড ছবি ‘রোগ’ মুক্তি পায় ২০০৫ সালে। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। শুধু নায়ক নয়, ভিলেন চরিত্রে কাজ করেছিলেন তিনি। এর সুবাদে ২০০৪ সালে ফিল্মফেয়ারে সেরা খলনায়কের পুরস্কার ঘরে তুলেছিলেন।
২০০৭ সালে ইরফান অভিনীত ‘লাইফ ইন অ্যা মেট্রো’ বক্স অফিসে বাজিমাত করে। এতে কাজ করে ফিল্মফেয়ারে সেরা পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কার জেতেন তিনি।
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা হওয়ার আগে শুধু টেলিভিশন সিরিয়ালে কাজ নয়, সঞ্চালনা করেছেন ইরফান। তার সঞ্চালিত অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘মানো ইয়া না মানো’, ‘কেয়া কেহনা’।
ব্যক্তিজীবনে লেখক সুতপা সিকদারের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন ইরফান খান। বাবিল ও আয়ান খান নামে তাদের দুই ছেলে আছে।