পৃথিবী আজ বিপন্ন-বিষণ্ণ। সব জাতি গোষ্ঠিকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে জীবনের সমীকরণ। এ যাবৎকালের ভয়াবহতম মহামারিতে তছনছ হয়ে গেছে সবকিছু। চারদিকে শুধু করোনার অভিঘাত।
পৃথিবীর লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত করোনাভাইরাসে। অদৃশ্য এই ভাইরাসের কাছে মানুষ আজ পরাজিত। পৃথিবীর দেশে দেশে টান পড়েছে অর্থনীতিতে, খাদ্যে ও বাণিজ্যে। কীভাবে এই পরিস্থিতি থেকে স্থায়ী উত্তরণ ঘটবে এমন কোনো আশার আলো এখনও জ্বলেনি কোথাও। নেই শুভ বার্তা। এর ভেতরেই জীবনকে নিয়ে হাঁটতে হচ্ছে মানুষকে, দেখতে হচ্ছে স্বপ্ন, রচনা করতে হচ্ছে আগামীর সম্ভাবনা।
পৃথিবীর সব দেশের বাস্তবতা যাই হোক, বাংলাদেশের বাস্তবতা একটু ভিন্ন। কারণ যুগ যুগ ধরে যাবতীয় প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে টিকে থাকাই বাঙালি জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য। কৃষি ও গ্রাম প্রধান বাংলা যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক ও মানুষ সৃষ্ট বহু বিপর্যয় ও মহামারি পার করেছে। বহু জীবন ও ত্যাগের বিনিময়ে নিজস্ব ভূমি, সংস্কৃতি, ভাষা ও জাতিগত স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
পৃথিবীর কাছে হতদরিদ্র ও তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় জাতির গৌরব অর্জন করেছে। যে কোনো দুর্যোগে বাংলাদেশের মানুষের টিকে থাকা ও উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তারা শত বিপর্যয়ের পরও হাসতে পারে। এবারও পারবে।
করোনাভাইরাসের মাঝে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। এখনও দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোয় প্রাকৃতিক ও দুর্যোগের অভিঘাত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এখনও মানুষের জীবন জীবিকায় রয়ে গেছে তার কঠিন প্রভাব। লবণাক্ত এলাকায় ফসল উৎপাদন করতে না পেরে দুর্বিসহ সংকটে পড়ছে মানুষ। কিন্তু প্রতিনিয়ত সংকটে চলা মানুষের জন্য এই কষ্টও যেন কোনো কষ্ট নয়। তারা পার হয়ে যায় জীবনের পথ। বাংলাদেশের কৃষকের কাছে প্রতিকূলতাই স্বাভাবিক। মাটির বুক থেকে ফসল ফলিয়ে আনা চাট্টিখানি কথা নয়। শ্রমে ঘামে কৃষক এক অনন্য মানুষ। ঈদে পার্বণে উৎসবে কৃষকই যুগিয়ে দেয় মূল উপকরণ মুখের খাবার। কিন্তু আমরা কি ভেবেছি কৃষকের ঈদের আনন্দ কতটুকু, কতটুকু তার মলিন বেদনার দিন!
এবার কৃষকদের সেই আনন্দ ও বেদনা নিয়ে শাইখ সিরাজের পরিকল্পনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় নির্মিত হয়েছে ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ বেদনা’। ঈদের পরদিন বিকাল সাড়ে ৪টায় চ্যানেল আইতে প্রচারিত হবে এটি।