‘চিঠির পাতা হারিয়ে গেছে খোঁজ পাইনা খামের, ডাকটিকিটের বইটা ছিলো টিকিট নানান দামের! দুপুর বেলায় দরজা নাড়া পিওন দাদার চিঠি, কোথাও যেন ঝাপসা লাগে হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি।’
ছড়ার মতই এখন স্মৃতি হয়ে আছে ডাকবাক্স। প্রিয় জনের চিঠি কখন হাতে আসবে সেই দীর্ঘ অপেক্ষা যেন শেষ হতই না। এখন আর অপেক্ষা করতে হয় না। মুহুর্তে ডিজিটাল না না মাধ্যমে চলে আসে। তবে, আগের সেই গভীর ভাবনা থাকেনা। আগে মমতা, ভালোবাসায় মন ডুবন্ত থাকত চিঠির দিকে।
আগের হাতের লেখা চিঠির আলাদা গুরুত্ব ও মায়াতে ভরপুর ছিল। চিঠিটা হাতে পেলে তবেই মন ভালো লাগতো। বর্তমানে সবকিছু সহজ হয়েছে। তবে, আগের মতো অগ্র, ভালোবাসা, অনুভূতি খুব একটা নেই। সময়ের পরিবর্তনে এখন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যের ডাকবাক্স। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে কিছু ডাকবাক্স অলস পড়ে আছে। আর কিছু জরাজীর্ণ অবস্থায়।
একসময় রাত বিরাতে রানারেরা এক হাতে হারিকেন, অপর হাতে বল্লম ও পিঠে চিঠির ব্যাগ নিয়ে ছুটে চলত চিঠি পৌঁছে দিতে। দুষ্কৃতকারীদের থেকে কোন জিনিস, চিঠি ও আত্নরক্ষায় বল্লম রাখা হতো সাথে। ভালো এবং মন্দ দুটোই থাকত চিঠির খবরে। খুশির খবর হলে রানারকে (চিঠি বাহক) বাড়িতে ভালো খাবার যাই থাকতো খাওয়ানো হতো। এসব সবই এখন অতীত। কিশোরগঞ্জ জেলাতে অনেকটা অলস পড়ে আছে ডাকবাক্স।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পোস্ট অফিসের সামনে লাল রং দেওয়া একটি ডাকবাক্স রাখা। কিছু চিঠি এখনো চলে তবে তার পরিমাণ যতসামান্য। ইউনিয়ন পোস্ট কেন্দ্রগুলোতে চিঠির বাক্স রয়েছে।
বিলুপ্তপ্রায় চিঠির বাক্স, আগে রাস্তার মোড়ে মোড়ে দেখা যেতো। চিঠির বাক্স, হলুদ রঙের পোস্টকার্ডে লিখতো চিঠি। মানুষ চিঠি লিখে স্টাম্প লাগিয়ে আদান প্রদান করতো চিঠি।
বাংলাদেশ বেতারের একটা অনুষ্ঠানের জন্য চিঠি লিখা হতো। ১০ বছর আগেও চিঠি লিখা পাঠানো হতো বাংলাদেশ বেতারে সাপ্তাহিক একটা অনুষ্ঠানে। তখন রেডিওর প্রচলন ছিলো। সেই চিঠি পড়ে শুনাতো, বেতারের সেই অনুষ্ঠানে। আজকে ই-মেইলের যুগ, চিঠির প্রচলন নেই বলা যায়, রেখে গিয়েছে কিছু স্মৃতি।সেই এন্টিনাওয়ালা রেডিও পাওয়া যায় না এখন।