অস্ট্রেলিয়ায় তৈরি হবে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু কাঠের টাওয়ার

, ফিচার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-10-15 18:31:54

বিশ্বে এমন অনেক ভবন আছে যেগুলো উচ্চতায় একে অপরকে ছাড়িয়ে গেছে। টুইন টাওয়ার, বুর্জ খলিফার মত আকাশচুম্বী ভবনের নাম হয়তো শুনেছেন বহুবার। এগুলো সবই ভারী কংক্রিটের তৈরি। কিন্তু এবার কাঠের তৈরি বহুতল ভবন নির্মাণ করতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার শহর পার্থে ১৯১ দশমিক ২ মিটার লম্বা (৬২৭ ফুট) হাইব্রিড এই বিশাল কাঠের টাওয়ারটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। টাওয়ারটি নির্মিত হলে এটিই হবে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু কাঠের তৈরি আবাসস্থল। সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

পার্থের মেট্রো ইনার-সাউথ জয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যাসেসমেন্ট প্যানেল (জেডিএপি) আকাশচুম্বী এই ভবনের জন্য গ্র্যাঞ্জ ডেভেলপমেন্টের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছে পার্থ কর্তৃপক্ষ।

প্রস্তাবিত এ টাওয়ারটি বর্তমান রেকর্ড ধারক ভবনের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ উঁচু হবে। অর্থাৎ এই ভবনটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু কাঠ-কংক্রিটের হাইব্রিড বিল্ডিং, উইসকনসিনের মিলওয়াকির অ্যাসেন্ট টাওয়ারকে ছাড়িয়ে যাবে। কাউন্সিল অন টল বিল্ডিংস অ্যান্ড আরবান হ্যাবিট্যাট এর জরিপ অনুসারে ২৫ তলা বিশিষ্ট অ্যাসেন্ট টাওয়ারের উচ্চতা ৮৬ মিটার (২৮৪ ফুট)।

গ্র্যাঞ্জ ডেভেলপমেন্টের মতে প্রস্তাবিত ভবনের ৪২ শতাংশ কাঠ দিয়ে তৈরি করা হবে এবং এর কলাম ও কোর রিইনফোর্সড কংক্রিট দিয়ে তৈরি করা হবে। এছাড়াও ৫০ তলা ভবনে ২০০ টিরও বেশি অ্যাপার্টমেন্ট থাকবে এবং এটি হবে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম কার্বন-নেগেটিভ আবাসিক ভবন।

গ্রাঞ্জ ডেভেলপমেন্টের পরিচালক জেমস ডিবল এক প্রেস রিলিজে বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে  আবাসন নির্মাণ পরিকল্পনায় জলবায়ু-সচেতন পদ্ধতির দিকে ফোকাস করা।

গ্রাঞ্জের মতে, বহুতল ভবনটি নির্মাণে ৬০০ টি গাছ সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগ্রহ করা গাছগুলো থেকে ৭,৪০০ ঘনমিটার (২,৬০,০০০ ঘনফুটের বেশি) কাঠ ব্যবহার করা হবে। ডিবল পার্থ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া এক প্রস্তাবে বলেছেন, আমরা ভবন নির্মাণে কংক্রিটের পরিমাণ বাড়াতে চাই না। কারণ আমরা একটি নতুন ওপেন সোর্সড ব্লুপ্রিন্ট পরিকল্পনা করেছি যেখানে ভবণ নির্মাণে পরিবেশবান্ধব উপাদান ব্যবহার করা হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এটি আমাদের আবাসন সংকট এবং জলবায়ু সংকট উভয়ই সমাধানের পথকে প্রশস্ত করবে।

গ্রেঞ্জের এ পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনায় কাঠের ব্যবহার ছাড়াও রয়েছে সবুজে বেষ্টিত একটি ছাদ বাগান, একটি শহুরে খামার এবং ৮০ টি নতুন সম্পূর্ণ-ইলেকট্রিক টেসলা মডেল থ্রিএস এর আবাসিক অ্যাক্সেস।

ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলস স্কুল অফ বিল্ট এনভায়রনমেন্টের প্রধান ফিলিপ ওল্ডফিল্ড বলেছেন, তিনি মনে করেন পরিবেশগতভাবে প্রকল্পটির একটি শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে।

তিনি প্রকল্পটির প্রশংসা করে বলেন, আমরা সাধারণত ইস্পাত এবং কংক্রিট দিয়ে লম্বা বিল্ডিং তৈরি করি। এতে পরিবেশের অনেক ক্ষতি হয়। পৃথিবী থেকে যত কার্বন নিঃসরণ হয় তার প্রায় ৮ শতাংশের জন্য সিমেন্ট দায়ী। তাই কাঠের মতো জৈব উপাদান দিয়ে কংক্রিট এবং ইস্পাতের প্রতিস্থাপন করলে এটি বিল্ডিংয়ের পরিবেশগত প্রভাবকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর