অ্যাম্বুলেন্স চালক থেকে সফল বানিজ্যিক মাল্টা চাষি

, ফিচার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও | 2023-10-16 16:17:26

অ্যাম্বুলেন্স চালক হুমায়ুন কবির। বাগানের প্রতি টান থাকায় বিভিন্ন জেলায় গিয়ে বাগান দেখে বেড়ান। অবশেষে বরিশালে এক মাল্টা বাগান দেখে মাল্টা বাগান করার ইচ্ছা জাগে তার। বিভিন্ন জায়গা থেকে মাল্টা চারা সংগ্রহ করে জমি লিজ নিয়ে বাগান করা শুরু করেন। অল্প কিছু গাছে মাল্টা থেকে ভালো আয় আসায় পরে ১১ বিঘা জমি নিয়ে বানিজ্যিক ভাবেই মাল্টা বাগান করে ফেলেন তিনি। 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আখানগর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের মাল্টা চাষী হুমায়ুনের শুরুটা ছিল ভীষণ অনিশ্চিত। তবে গত ২ বছরে মাল্টা বাগান হতে ভালো ফলন পাওয়ায় ও লাভবান হওয়ায় মাল্টা বাগান আরো বড় করার আশা প্রকাশ করেন তিনি। বারি-১, ইন্ডিয়ান, পাকিস্তানি ও ভিয়েতনামের ইয়ালো জাতের মাল্টা রয়েছে হুমায়ুন এর বাগানে।

হুমায়ুন কবির বলেন, আমি বর্তমানে ১১ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করেছি। গতবারের তুলনায় এ বছর বেশি ফলন হয়েছে। আশা করছি ৩/৪ লক্ষ টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে বাগান করতে গিয়ে তেমন ধারণা না থাকায় প্রথমের দিকে চারা নির্বাচন করতে আমাকে অসুবিধায় পড়তে হয়। তবে এখন ইউটিউব দেখে বাগান এর পরিচর্যা করে বাগান ভালোই হয়েছে আমার। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কিংবা স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ পেলে আগামীতে ৩০ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষের পরিকল্পনা আছে।
বাগানের ম্যানেজার দবিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বাগানে গড়ে ৬/৭ জন শ্রমিক কাজ করেন। আমরা অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে ফল হারভেস্টিং শুরু করবো। এখন বাগান পাহাড়া দিতে হচ্ছে ও নিয়মিত ফলের যত নিতে হচ্ছে।

বাগানের আরেক শ্রমিক ইন্তাজ আলী বলেন, আমরা ৪/৫ জন শ্রমিক প্রতিদিন দিন হাজিরা হিসেবে এখানে কাজ করি। এই উপার্জনে আমাদের সংসার ভালোই চলে। বাগান আরো বৃদ্ধি করা হলে আরো অনেকের কর্মসংস্থান হবে।

বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থী খালেদ আল মাসুদ বলেন, আমি হুমায়ুন ভাইয়ের মাল্টার বাগানটা দেখতে এসেছি। দেখে ভালো লাগলো, ভবিষ্যতে আমিও মাল্টার বাগান করবো। বিদেশী ফল হলেও দেশে এই ফলের ভালোই চাহিদা রয়েছে। আর ফলনও খুব ভালোই হচ্ছে। তাই হুমায়ুন ভাই এর কাছে পরামর্শ ও চারা দুটোই নেওয়ার জন্য এসেছি।

ঠাকুরগাঁওয়ে আট’শর অধিক লেবু বাগান রয়েছে 
 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, ঠাকুরগাঁও জেলায় ছোট-বড় মোট আট’শর অধিক লেবু জাতীয় বাগান রয়েছে, যা মাল্টা এবং কমলা লেবু। ১০০ হেক্টরের অধিক জমিতে মাল্টা বা লেবু জাতীয় বাগানের চাষ হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি লেবু জাতীয় অর্থাৎ মাল্টা চাষের জন্য ভীষণ উপযোগী। এ স্কীমের আওতায় সদর উপজেলা বাদে বাকি চারটি উপজেলায় লেবু জাতীয় প্রকল্পের আওতায় প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের কারিগরি সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও চারা বিতরণ প্রকল্প বিদ্যমান। জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সকলেই এ ধরনের বাগান সম্প্রসারণের জন্য নিরলস ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর