ভারতে স্বেচ্ছা মৃত্যু অনুমোদন

, আন্তর্জাতিক

সেন্ট্রাল ডেস্ক ৩ | 2023-09-01 19:18:57

ভারতে স্বেচ্ছা মৃত্যু অনুমোদন দিয়ে এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে দেশটি সুপ্রিম কোর্ট। গাইডলাইন মেনে স্বেচ্ছা মৃত্যুতে সম্মতি দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ‘সম্মানজনক মৃত্যু জীবনের অধিকার’ বলে শুক্রবার সর্বোচ্চ আদালত মন্তব্য করেছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ শুক্রবার এই মন্তব্য করে। এ বিষয়ে সরকারকে উপযুক্ত আইন প্রণয়নেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারকে। পাশাপাশি স্বেচ্ছা মৃত্যু নিয়ে আইন প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত এই গাইডলাইন বহাল থাকবে বলেও হয়েছে জানানো। সজ্ঞানে কোনো ব্যক্তি ঘোষণা করতে পারেন, শুধুমাত্র জীবনদায়ী ব্যবস্থায় তার বেঁচে থাকার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে, সে জীবন তিনি চাইবেন না, সেক্ষেত্রে স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য এই 'লিভিং উইল'কে মান্যতা দিতে হবে বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০১১ সালে অরুণা শানবাগ মামলায় পরোক্ষ স্বেচ্ছা মৃত্যুতে সায় দেয় শীর্ষ আদালত। পরে লিভিং উইল কার্যকর করার আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় 'কমন কজ' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বলা যেতে পারে এই আবেদনের ভিত্তিতেই এই রায়। রায়ে বলা হয়েছে, পরোক্ষ স্বেচ্ছা মৃত্যু কখন-কীভাবে কার্যকর করা হবে, তা ঠিক করবে মেডিক্যাল বোর্ড। পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে আইন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এক্ষেত্রে একটি গাইডলাইন ঠিক করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ভারতের কেন্দ্রিয় সরকার জানিয়েছে, আইন কমিশনের সুপারিশ মেনে পরোক্ষ স্বেচ্ছা মৃত্যুর ক্ষেত্রে আইন আনা হবে। তবে, প্রত্যক্ষ স্বেচ্ছা মৃত্যু কার্যকর করার কোনো প্রশ্নই নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এখন প্রশ্ন উঠছে, কী এই প্রত্যক্ষ স্বেচ্ছা মৃত্যু? চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুসারে প্রত্যক্ষ স্বেচ্ছা মৃত্যু আত্মহত্যাকে বলা হচ্ছে। আইনি ভাষায় যার ব্যাখ্যা, কোনো ব্যক্তি যখন নিষিদ্ধ ওষুধ নিজের ওপর মাত্রাতিরিক্ত প্রয়োগ করে আত্মহননের পথ বেছে নেন, তখন তাকে প্রত্যক্ষ স্বেচ্ছা মৃত্যু বলা হয়। প্রশ্ন হলো কীভাবে প্রয়োগ করা হয় এই স্বেচ্ছা মৃত্যু? মেডিক্যাল ডিকশনারি অনুসারে, পরোক্ষ স্বেচ্ছা মৃত্যু তখনই প্রয়োগ করা যায় যখন কোমায় থাকা কোনো ব্যক্তিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার মতো আর কোনো অবস্থা থাকে না। সেই সময় তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দিয়ে সাধারণ পদ্ধতিতে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করেন চিকিৎসকরা। এমনকী, তার ওপর ওষুধ প্রয়োগও বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে রোগীকে মাত্রাতিরিক্ত পেইনকিলার দেওয়া হয়। এরফলে শ্বাসকষ্ট হয়ে মৃত্যুর দিকে ঢোলে পড়েন রোগী। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, এই পেইনকিলার একদিকে রোগীর ব্যাথা প্রশমনে কাজ করে, অন্যদিকে হৃদযন্ত্র ক্রমশ দুর্বল করে দেয়। ফলে, সময়ের আগেই মৃত্যু হয় রোগীর। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়গুলির উপরই প্রথমে আলোচনা করে। এরপর স্থির হয়, পরোক্ষ স্বেচ্ছা মৃত্যু কখন-কীভাবে কার্যকর করা হবে, তা ঠিক করবে মেডিক্যাল বোর্ড।

এ সম্পর্কিত আরও খবর