এফবিআইয়ের পরিচালক ক্রিস্টোফার ওয়ে এবং সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সির (সিআইএসএ) পরিচালক ক্রিস ক্রেবসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতে- ‘স্ব শরীরে ভোট দেওয়া নিরাপদ হবে’।
তবে তিনি ‘আত্মবিশ্বাসী যে, কোনো বিদেশি সাইবার চক্রান্তকারী ভোট পরিবর্তন করতে পারবেন না এবং আমরা এখনও বিশ্বাস করি যে জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করা তাদের পক্ষে অবিশ্বাস্যরকম কঠিন হবে।’
সিএনএন'এর জাতীয় সুরক্ষা বিশ্লেষক সামান্থা বিনোগ্রাদ এক প্রতিবেদনে এসব জানিয়েছেন।
এফবিআইয়ের পরিচালক ক্রিস্টোফার ওয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের অবকাঠামো নির্বিঘ্ন রাখার লক্ষ্যে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বছরের পর বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি এবং আজও অবকাঠামো স্থিতিস্থাপকই বজায় রয়েছে। ভোট সঠিক গণনা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস থাকা উচিত। এ নিয়ে অহেতুক কাল্পনিক প্রচারণা ও সন্দেহ স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।
তবে এর অর্থ এই নয় যে বিদেশি এজেন্টরা সামনের দিনগুলোতে এ নিয়ে লেগে নেই। গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারীর সদস্যরা রাশিয়া, ইরান এবং চীন সহ বিরোধীদের কাছ থেকে হুমকির সন্ধান চালাতে ট্রাকিং করে যাচ্ছে। আমাদেরও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ আছে, বিশেষত হিংস্র উগ্রবাদী, মিলিশিয়া গ্রুপের কাছ থেকে।
নির্বাচনের আগ পর্যন্ত একটি উদ্বেগ রয়েছেই। ভোট গণনা এবং ফলাফল বদলে দিতে বিদেশি বিরোধীরা নির্বাচনের সাথে সম্পর্কিত অবকাঠামোকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচারণা এবং তাদের সহযোগীদের হ্যাক করার চেষ্টা করতে পারে, তথ্য পেতে তাদের সাইটে প্রবেশ করতে পারে। এটি নতুন কিছু নয়। চীনা হ্যাকাররা ২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রার্থী বারাক ওবামা এবং জন ম্যাককেইনের কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলোর সাথে মিলে গিয়েছিল। রাশিয়া সফলভাবে ২০১৬ সালে ডেমোক্র্যাটিক টার্গেট হ্যাক করেছিল এবং আমাদের ইঙ্গিত রয়েছে যে তারা এখনও এটিতে বহাল রয়েছে। মাইক্রোসফট ইঙ্গিত দিয়েছে যে ইরান সহ এই দেশগুলো নির্বাচনের সাথে যুক্ত মানুষ এবং গোষ্ঠীগুলোকে হ্যাক করার চেষ্টা করেছে। গুগলও বলেছে যে হ্যাকাররা ২০২০ সালের রাষ্ট্রপতি প্রচারণা উভয়কেই টার্গেট করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের বিরুদ্ধে সাইবার অ্যাটাক চলছেই। রাশিয়ান হ্যাকাররা কয়েক ডজন রাষ্ট্র ও স্থানীয় সরকারের নেটওয়ার্ককে টার্গেট করেছে এবং কমপক্ষে দুটি সার্ভারের ডেটা চুরি করেছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির হুমকি মূল্যায়ন বিভাগের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে যে ‘বিশ্বের বেশ কয়েকটি পরিশীলিত সাইবার ক্ষমতার অধিকারী রাশিয়া - সাইবার অ্যাটাকের মাধ্যমে মার্কিন নির্বাচনের সুরক্ষিত ও জটিল অবকাঠামো নেটওয়ার্ককে বাধাগ্রস্ত করতে বা ক্ষতি করতে পারে।’
সিআইএসএ আরও উল্লেখ করেছে, একজন ইরানি হ্যাকার রাষ্ট্রীয় নির্বাচনের ওয়েবসাইটগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল এবং তারা বিশ্বাস করে যে এটি ২০২০ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ভোটারদের ভয়ভীতিমূলক ইমেল এবং নির্বাচনের সাথে সম্পর্কিত নেতিবচাক ব্যাপক প্রচারণা ঘটায়। সুরক্ষিত অবকাঠামো লক্ষ্য ও প্রবেশের সক্ষমতা প্রদর্শন করে এবং তারা সামনের দিনগুলোতে এটি ব্যাহত করার বিকল্পগুলো সক্রিয় করতে বেছে নিতে পারে।
আমরা প্রার্থীদের সম্পর্কে মার্কিন ভোটারদের মতামত পরিবর্তন করার জন্য আমাদের বিরোধীদের দক্ষতার বিষয়টিও বাতিল করতে পারি না। কোভিড-১৯ এ মহামারির সময় বৈষম্যমূলক প্রচার এবং বিদেশি প্রভাব অভিযান পরিচালনা করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এফবিআই ‘২০২০ সালের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য রাশিয়ানরা অত্যন্ত সক্রিয় প্রচেষ্টা দেখেছিল।’ ইরান ও চীনও বিভিন্ন মঞ্চে জনমতকে প্রভাবিত করতে কাজ করছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
সাইবার স্পেসে হুমকির পাশাপাশি প্রকৃত শারীরিক হুমকিও রয়েছে। এর মধ্যে হিংস্র ভোটারদের ভয়ভীতিও দেখানো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ডিএইচএস ইন্সপেক্টর জেনারেল সম্প্রতি সতর্ক করেছেন, ভোটদান এবং ব্যালট রাখার জায়গাগুলোর মতো শারীরিক সুরক্ষার জন্য এখনও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।