রাশিয়া ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে মস্কো অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
বুধবার (১৫ এপ্রিল) অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কোঅপারেশন ইন ইউরোপ (ওএসসিই)-এর চেয়ারপারসনের সঙ্গে এক ফোনালাপে নিজ দেশের এমন অবস্থানের কথা জানান তিনি। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম- আনাদোলু এজেন্সি, ভয়েস অব আমেরিকা, আল জাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার ব্যাপক সেনা সমাবেশের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো। এ ইস্যুতে পশ্চিমাদের ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে মস্কো।
বুধবার বিষয়টি নিয়ে সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ওএসসিই-এর বর্তমান চেয়ারপারসনের সঙ্গে কথা বলেন ল্যাভরভ। দুই নেতার এই ফোনালাপে ওএসসিই-কে পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে উঠে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এমন সময়ে ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা বললেন ল্যাভরভ যার একদিন আগেই এ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় সীমান্তে উত্তেজনার পারদ কমিয়ে আনতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ফোনালাপে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জোরালো অবস্থানের কথা তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘দখলকৃত ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের সীমান্ত বরাবর হঠাৎ করে মস্কোর সেনা সমাবেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। ওয়াশিংটন চায় রাশিয়া যেন সেখানে উত্তেজনার পারদ কমিয়ে আনে।’
এদিকে ইউক্রেন সীমান্তে হাজার হাজার সেনা মোতায়েনের জন্য রাশিয়াক অভিযুক্ত করেছেন ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ। মস্কোর অবস্থানকে অযৌক্তিক হিসেবেও আখ্যায়িত করেন তিনি। সীমান্তে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, উদ্বেগজনক এই উত্তেজনা নিরসনে তার দেশ সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
রাশিয়ার উসকানি সত্ত্বেও ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ মাসের শেষদিকে ইইউ’র ২৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়েছেন ইইউ-র বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল। এমন পরিস্থিতিতেই পুতিনকে ফোন করে এ ব্যাপারে নিজ দেশের অবস্থান স্পষ্ট জানিয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
উল্লেখ্য, রুশপন্থি গেরিলাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা নিয়ে দনবাস এলাকা নিয়ে সম্প্রতি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা প্রকট আকার ধারণ করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেন সীমান্তে সেনা সমাবেশ করে মস্কো। রাশিয়ার পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। রুশ কর্মকর্তা দিমিত্রি কোজাক-এর ভাষায়, ‘একটা গুলিও পায়ে নয়, মুখে চালানো হবে।’ এমন পরিস্থিতিতে মিত্র দেশ ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।