দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে আদালত অবমাননার দায়ে ১৫ মাসের কারাদণ্ডকে অসাংবিধানিক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে জ্যাকব জুমা ফাউন্ডেশন। গত মঙ্গলবার আদালত জুমাকে কারাদণ্ডের রায় দেন।
জ্যাকব জুমা ফাউন্ডেশনের এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘জুমার বিরুদ্ধে দেওয়া এ রায় বিচার বিভাগীয় আবেগ ও বিদ্বেষপূর্ণ। আমাদের সংবিধানের সঙ্গে এমন রায় কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’
জ্যাকব জুমার বিরুদ্ধে দেওয়া রায়ে মঙ্গলবার বলা হয়, আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে জুমাকে (৭৯) নিজ থেকে পুলিশের কাছে ধরা দিতে হবে। যদি তিনি তা না করেন, তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শিশি খামপেপে বলেন, জুমা আদালত অবমাননার দায়ে অপরাধী।
জ্যাকব জুমা ক্ষমতায় থাকাকালে জুমার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছিলেন দেশটির উপপ্রধান বিচারপতি রেমন্ড জোনডো। গত ফেব্রুয়ারিতে তদন্তের জন্য তলব করা হলে হাজির হননি জুমা। তিনি দাবি করে আসছিলেন, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে জোনডো তার বিরুদ্ধে এই তদন্ত করছেন। এই আদালত অবমাননার দায়েই তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালে জুমা বিভিন্ন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। পদত্যাগের মধ্য দিয়ে ২০১৮ সালে জুমার প্রায় ৯ বছরের শাসনামলের অবসান ঘটে। জুমার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, তিনি রাষ্ট্রীয় অর্থ লোপাট করেছেন এবং ব্যবসায়ীদের রাজনীতিতে নাক গলানোর সুযোগ করে দিয়েছেন। বিশেষ করে জুমার আশকারাতেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ‘গুপ্ত পরিবার’ নামে একটি সুপরিচিত ব্যবসায়ী পরিবার রাজনীতিতে বেপরোয়া হস্তক্ষেপ করেছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরের তিন ভাই অজয় গুপ্ত, অতুল গুপ্ত ও রাজেশ ওরফে টনি গুপ্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যবসা শুরু করেন। দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনীতিকদের সঙ্গে পরিবারটির ঘনিষ্ঠতা সবার সামনে আসে ২০১৩ সালে।
তবে জ্যাকব জুমা বরাবরই বলে আসছেন, বিদেশি কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা এক দশক ধরেই তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র করছিল। গুপ্ত পরিবারের হাতে তিনি দেশ তুলে দিয়েছেন, এমন সব অভিযোগই মিথ্যা।