বিশ্বে করোনা রোগী শনাক্ত প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি

, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 06:36:21

বিশ্বজুড়ে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এর কারণ হিসেবে করোনার ডেলটা ধরনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৯ কোটি ৪২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।

করোনা সংক্রমণের পরিসংখ্যান নিয়মিত হালনাগাদকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্য বলছে, শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা নাগাদ বিশ্বে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৯ কোটি ৪২ লাখ ৩৬ হাজার ১৮১।

একই সময়ে বিশ্বে করোনায় মোট মারা গেছে ৪১ লাখ ৬৩ হাজার ৮১৫ জন। বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়। ব্রাজিল আছে তৃতীয় অবস্থানে। করোনার সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে রাশিয়া। পঞ্চম স্থানে রয়েছে ফ্রান্স।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এশিয়ায় করোনা মহামারির নতুন কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে ইন্দোনেশিয়া। মহামারিতে বিপর্যস্ত দেশটির পর্যটন দ্বীপ বালি ও জাভায় দেখা দিয়েছে অক্সিজেন-সংকট। এরই মধ্যে এই দুই দ্বীপসহ ১৫টি অঞ্চলে জারি করা বিধিনিষেধের সময়সীমা আজ রোববার শেষ হতে যাচ্ছে। এদিকে আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় ইন্দোনেশিয়ায় মৃত্যুর হার তিন গুণ বেশি।

বালির স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান কেতুত সুয়ারজায়া স্থানীয় সরকারি সংবাদমাধ্যম অন্তরাকে বলেন, ‘প্রতিদিন নতুন করে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার কারণে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। ১৪ জুলাই থেকে আমরা অক্সিজেন-স্বল্পতায় ভুগছি।’ তিনি আরও বলেন, বালির রোগীদের জন্য গত বৃহস্পতিবার দরকার ছিল ১১৩ দশমিক ৩ টন অক্সিজেন।

সেখানে সরবরাহ ছিল মাত্র ৪০ দশমিক ৫ টন। তবে এরই মধ্যে দেশটির সরকার যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে অক্সিজেন আমদানি শুরু করেছে বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়। আর সিএনএনের খবর বলা হয়, জাভায় এক দিনে অক্সিজেনের অভাবে একটি হাসপাতালে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

দেশটির সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত ৩০ লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৮০ হাজার ৫৯৮ জনের। মূলত ডেলটা ধরনের কারণে দেশটিতে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশটিতে প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে চললে একটা সময় দেশটির স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

ইন্দোনেশিয়ায় গত মে মাসের শেষ দিকে করোনা সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে দেরি করে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেলটা ভেরিয়েন্ট ধরা পড়ার পর সেখানে এটি দ্রুতই ছড়িয়ে পড়তে থাকে। শুরুতেই কার্যকর পদক্ষেপ নিলে এই পরিস্থিতি কিছুটা ঠেকানো যেত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যথেষ্ট নমুনা পরীক্ষার অভাবে সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। এর ফলে ঠিক সময় করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা যাচ্ছে না। ভারতের এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ভারতে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯ হাজার ৯৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ৫৪৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২ দশমিক ৪।

আগের দিন শুক্রবার শনাক্তের হার ছিল ২ দশমিক ১৪। সরকারি তথ্য অনুসারে, ভারতে করোনা শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ১৩ লাখ ৩২ হাজার ১৫৯। করোনায় মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ৪ লাখ ২০ হাজার ৪৩। দেশটিতে ৩৩ দিন ধরে দৈনিক ৩ শতাংশের নিচে করোনা শনাক্ত হচ্ছে। ফলে করোনার সংক্রমণ বেশ খানিকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতে করোনা থেকে রোগীর সেরে ওঠার হারও বাড়ছে। এ হার ৯৭-এর বেশি। এ ছাড়া দেশটিতে ৪২ কোটির বেশি মানুষকে এখন পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে আগস্টের শেষ দিকে তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর