মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে বলে প্রথমবারের মত স্বীকার করল বাইডেন প্রশাসন।
রোববার (২০ মার্চ) এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।
সোমবার (২১ মার্চ) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস হলোকস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এ বিষয়ে জনসম্মুখে একটি ঘোষণা দেবেন। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এরকম একটি ঘোষণার পক্ষে দাবি জানিয়ে আসছিল।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছিলেন, মিয়ানমারের সহিংসতার বিষয়টি তিনি নতুন করে পর্যালোচনা করবেন। তার সেই প্রতিশ্রুতির প্রায় ১৪ মাস পর এই ঘোষণা আসতে যাচ্ছে।
মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী ২০১৭ সালে একটি সামরিক অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানে প্রধানত মুসলিম রোহিঙ্গাদের তাদের বাড়িঘর ছেড়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে যেতে বাধ্য করেছিল। সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে সংঘটিত নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের অভিযোগকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেনি মিয়ানমার।
এই সহিংস ঘটনার ফল হিসেবে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। ফলে দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনার সুপারিশ করে জাতিসংঘ।
কিন্তু তৎকালীন সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পে এক গণহত্যা বলতে অস্বীকার করেছিলেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেন, ব্লিঙ্কেন নিজে আইনি ও বাস্তব বিশ্লেষণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিশ্লেষণটি উপসংহারে পৌঁছেছে যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী গণহত্যা চালিয়ে এবং ওয়াশিংটন বিশ্বাস করে যে আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারের জেনারেলদের জবাবদিহি করতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াবে।
ডেমোক্র্যাটিক দলের সিনেটর ও সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য জেফ মার্কলে বলেন, অবশেষে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংস ঘটনাগুলোকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করায় আমি বাইডেন প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই। যদিও এ ঘোষণা আরও অনেক আগেই আসা উচিৎ ছিল, তবুও এটি এ নির্দয় শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার পথে একটি শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
কিন্তু সবসময়ই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা করার কথা অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, ২০১৭ সালের অভিযান ছিল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।