করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। এর প্রভাব পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রেও। দেশটিতে রেকর্ড মূল্যস্ফীতিতে খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম এখন আকাশচুম্বী।
এমন পরিস্থিতি সামলাতে ঋণে সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুদের হার বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে।
দ্য ফেডারেল রিজার্ভ বলেছে, এটি তার মূল সুদের হার শতকরা তিন-চতুর্থাংশ বাড়িয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত করবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে যাওয়ার পর মার্চের পর এটি তৃতীয় বারের মতো বৃদ্ধি। এ ছাড়া অপ্রত্যাশিত এ মূল্যস্ফীতি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এক বৈঠকের পর মার্কিন কর্মকর্তারা আশা করছেন- ফেডারেল ব্যাংকগুলো যে হারে ঋণ নেয়, তা বছরের শেষ নাগাদ ৩ দশমিক ৪ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো একই রকম পদক্ষেপ নেওয়ায় এটি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি বিশাল পরিবর্তনকে চিহ্নিত করে, যেখানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও পরিবারগুলো বছরের পর বছর কম ঋণের খরচ উপভোগ করেছে।
পরামর্শক সংস্থা ইওয়াই-পার্থেনন-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ গ্রেগরি ড্যাকো বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী অর্থনীতির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং কিছু উদীয়মান বাজারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের নীতি কঠোর করছে।
তিনি বলেন, এটি এমন একটি বৈশ্বিক পরিবেশ, যা আমরা গত কয়েক দশকে অভ্যস্ত ছিলাম না। এটি ব্যবসায়িক খাতের জন্য এবং বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে।
এদিকে যুক্তরাজ্যে গত এপ্রিলে ভোগ্যপণ্যের দাম ৯ শতাংশ বেড়েছে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ডিসেম্বর থেকে তার পঞ্চম হার বৃদ্ধি ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যা দেশটিতে ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো তার বেঞ্চমার্ক হার ১ শতাংশের উপরে নিয়ে গেছে।
এছাড়া ব্রাজিল, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও তাদের সুদের হার বাড়িয়েছে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এই গ্রীষ্মের পর সুদের হার বাড়ানোর পরিকল্পনার রূপরেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র করোনা মহামারি আঘাতের সময় ২০২০ সালে অর্থনীতিকে সমর্থন করার জন্য সুদের হার কমিয়েছিল। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানতে চলতি বছর ইতিমধ্যে দুবার সুদের হার বাড়িয়েছে। গত মার্চ মাসে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ এবং তা মে মাসে ০.৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সেই সময় দেশটির ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেছিলেন, কর্মকর্তারা তীক্ষ্ণ বৃদ্ধি বিবেচনা করছেন না।