শ্রীলঙ্কা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। দেশটিতে ব্যাপক সংকট জ্বালানি তেলেরও। এমন পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল শ্রীলঙ্কা সরকার।
শুধু আপৎকালীন পরিষেবায় যুক্ত গাড়িগুলো পেট্রল, ডিজেল পাবে। সে কারণেই সমস্ত বেসরকারি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
দেশটির সরকার বলেছে, আজ মঙ্গলবার (২৮ জুন) থেকে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য শুধুমাত্র বাস, ট্রেন, চিকিৎসা সেবা এবং খাদ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত যানবাহনে জ্বালানি ভরতে দেওয়া হবে। এই নির্দেশ আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
এদিকে গত সপ্তাহেই সমস্ত সরকারি স্কুল বন্ধের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। কিছু অফিস স্বল্প সংখ্যক কর্মী দিয়ে চলছে। এদিকে রোববারই সরকার জানিয়েছিল জ্বালানি তেল চাইলেই পাওয়া যাবে না। তবে এবার একেবারে তেল দেওয়াই বন্ধ করে দিচ্ছে সরকার।
সরকারি মুখপাত্র বান্দুলা গুনাওয়ারদানা জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে এত বড় অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি এর আগে আর কখনও হয়নি।
এদিকে বিভিন্ন পেট্রল পাম্পের সামনে ইতিমধ্যেই গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে। মারাত্মক দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন বাসিন্দারা। জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে। পাঁচজনের মধ্যে চারজন একবেলা খেয়ে থাকছেন। একেবারে মানবিক সংকট শুরু হয়ে গিয়েছে।
এবার তার সঙ্গে যুক্ত হল জ্বালানি তেলের ভয়াবহ সংকট। সেক্ষেত্রে কাল থেকে কার্যত রাস্তা গাড়ি শূন্য হয়ে যেতে পারে।
দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী দিনে প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলোতে জ্বালানি দেওয়ার জন্য দেশে মাত্র ৯ হাজার টন ডিজেল ও ৬ হাজার টন পেট্রোল রয়েছে। যা দিয়ে এক সপ্তাহেরও কম সময় চলবে।
শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেছেন, আমরা জ্বালানি তেলের মজুত বাড়ানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তবে, বলতে পারছি না কবে নাগাদ মজুত বাড়ানো সম্ভব হবে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ অ্যালেক্স হোমস বিবিসিকে বলেছেন, রাশিয়ার জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা শ্রীলঙ্কার ক্রমবর্ধমান সংকটের আরেকটি ছোট লক্ষণ।