চীন ও ভারতের মধ্যে বিশাল সীমারেখার মধ্যে বিতর্কিত সীমান্ত এলাকাগুলো তিনটি জোন-এ বিভক্ত। একটি হচ্ছে লাদাখকে ঘিরে ওয়েস্টার্ন সেক্টর। দ্বিতীয়টি তিব্বত সীমান্ত লাগোয়া ভারতের হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড রাজ্য নিয়ে তৈরি সীমানা এবং তৃতীয়টি অরুণাচল সীমান্তে থাকা ইস্টার্ন সেক্টর।
আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, প্রাকৃতিক বিরূপতার কারণে চীন ও ভারতের সীমান্ত বাস্তবক্ষেত্রে একটি "প্রকৃতই কল্পিত সীমারেখা"। ভারত বলছে, সীমানাটি ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। চীন বলছে, সীমানা দুই হাজার কিলোমিটারের কিছু বেশি।
ভারত দাবি করে, আকসাই চীনের মালভূমি। সুইজারল্যান্ডের আয়তনের সমান একটি এলাকা যা চীন সীমান্তের পশ্চিম অংশে নিয়ন্ত্রণ করে। পক্ষান্তরে চীন অরুণাচল প্রদেশ দাবি করে।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, অরুণাচল প্রদেশের ১১টি জায়গার নাম পরিবর্তন করে সেগুলি দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে দাবি করেছে চীন। এমনকি, চীনের তরফে অরুণাচল প্রদেশের রাজধানী ইটানগরের কাছাকাছি একটি শহরের নামও পরিবর্তন করা হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে ভারতের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
চীনের অসামরিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রাণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘দক্ষিণ তিব্বতের কিছু ভৌগোলিক এলাকার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।’’ চীনের সংবাদমাধ্যম 'গ্লোবাল টাইমস' সরকারি বিজ্ঞপ্তি উদ্ধৃত করে বলেছে, “রোববার অসামরিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক ভাবে ১১টি এলাকার নাম পরিবর্তন করেছে। যার মধ্যে রয়েছে দু’টি বিস্তীর্ণ ভূমি এলাকা, দু’টি আবাসিক এলাকা, দু’টি নদী এবং পাঁচটি পর্বতশৃঙ্গ।’’
চীন একটি মানচিত্রও প্রকাশ করেছে যেখানে অরুণাচল প্রদেশের কিছু অংশকে চীনের বলে দাবি করা হয়েছে। এবং এই এলাকাকে ‘জাংনান’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে চীনের তরফে। এ বিষয়ে রোরবার চীনা এবং তিব্বতি-সহ মোট তিনটি ভাষায় সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে জানানো হয়েছে, মানুষ যাতে আরও সহজে এলাকাগুলোর নাম সঠিক ভাবে মনে রাখতে পারে, তার জন্যই এই পদক্ষেপ।
এর আগে ২০১৭ এবং ২০২১ সালেও ‘জাংনান’ চীনের বলে দাবি করেছিল সে দেশের সরকার। এ-ও দাবি করা হয়েছিল যে, ওই এলাকা চীনের বলে দাবি করার যথেষ্ট ‘ঐতিহাসিক এবং প্রশাসনিক ভিত্তি’ রয়েছে। তবে ভারত সেই প্রচেষ্টাকে বিফলে পাঠিয়েছিল। যদিও সম্প্রতি নামকরণের বিষয়টিকে নিয়ে সৃষ্ট চীন-ভারত সীমান্ত বিষয়ক চাপা উত্তেজনায় ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় এখনও প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি।