রাশিয়ানদের ঐক্যের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, বিদ্রোহী ওয়াগনার নেতাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
তবে পুতিন সাধারণ ওয়াগনার সেনাদের ‘দেশপ্রেমিক’ বলে অভিহিত করেছেন। যারা ইচ্ছা করলে সেনাবাহিনীতে যোগদান করতে পারে, আবার চাইলে বেলারুশ বা নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন।
সোমবার (২৬ জুন) মস্কোতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বিবিসির।
পুতিন বলেন, বিদ্রোহের প্রথম থেকেই রক্তপাত এড়াতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এজন্য তিনি সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের সাহসের প্রশংসা করেন।
এর আগে, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ বাদ দিয়ে ওয়াগনারের সেনাদের ফিল্ড ক্যাম্পে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। বিনিময়ে তার বিরুদ্ধে করা ফৌজদারি মামলা তুলে নেওয়া হবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, প্রিগোজিন বেলারুশে চলে যাবেন, তার মামলা তুলে নেওয়া হবে।
তবে, প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। সূত্র বলেছে, প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি। তদন্ত চলমান রয়েছে। রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) মামলাটি তদন্ত করছে বলে কোমেরসান্ত পত্রিকা জানিয়েছে।
এর আগে গত শনিবার প্রসিকিউটর জেনারেলের দপ্তর জানিয়েছিল, সশস্ত্র বিদ্রোহ সংঘটিত করার অভিযোগে রাশিয়ার দণ্ডবিধির ২৭৯ ধারায় গত শুক্রবার প্রিগোশিনের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা করে এফএসবি। ভাড়াটে যোদ্ধাদের এই বাহিনীর একটি শিবির আক্রান্ত হয়েছে অভিযোগ করে প্রিগোশিন মস্কো অভিমুখে ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান নিয়ে যাত্রা শুরুর ঘোষণা দিলে মামলাটি করা হয়। দোষী সাব্যস্ত হলে তার ১২ থেকে ২০ বছরের সাজা হতে পারে।
এদিকে ভাগনার প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানির (পিএমসি) প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নয়, বরং প্রতিবাদ জানাতে মস্কো অভিমুখে যাত্রা করেছে তার বাহিনী।
সোমবার ১১ মিনিটের এক অডিও বার্তায় ভাগনারপ্রধান এ দাবি করেছেন।
বিদ্রোহ থেকে সরে আসার পর প্রথমবারের মতো দেওয়া এই অডিও বার্তায় প্রিগোশিন বলেন, আমরা রাশিয়ার নেতৃত্বকে উৎখাত করার জন্য যাত্রা করিনি। ভাগনারপ্রধান আরও বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি সই এবং ১ জুলাই থেকে তার ভাড়াটে বাহিনী বিলুপ্ত করা নিয়ে কোনো মতৈক্য হয়নি।
এ ছাড়া রাশিয়ার বিমানবাহিনীকে আঘাত করতে বাধ্য হয়েছেন উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেন প্রিগোশিন। তিনি বলেন, রুশ সেনাদের রক্তপাত এড়াতে তারা (ভাগনার বাহিনী) মস্কো অভিমুখী যাত্রা থেকে সরে আসে বলে জানান তিনি।
গত শুক্রবার রাতে ওয়াগনার রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দেয়, পরে তারা রস্তোভ-অন-দনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলার সদরদপ্তর দখলে নেয় এবং মস্কোর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। রাজধানী থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় তারা বিদ্রোহে ক্ষান্ত দেয় এবং ক্যাম্পে ফিরে যায়।