ইউক্রেন নিয়ে শান্তি আলোচনার ধারণা প্রত্যাখ্যান করেন না বলে মন্তব্য করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনে শান্তি আলোচনার ভিত্তি হিসেবে কাজ করতে পারে আফ্রিকা ও চীনের উদ্যোগ। তবে তিনি সতর্ক করেছেন এমন কিছু জিনিস রয়েছে যা বাস্তবায়ন করা অসম্ভব।
শনিবার (২৯ জুলাই) সেন্ট পিটার্সবার্গে রাশিয়া-আফ্রিকা ইকোনমিক ও হিউম্যানিটারিয়ান ফোরামের সমাপনী দিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, মস্কো শান্তি আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেনি।
পুতিন বলেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী যখন আক্রমণ চালাচ্ছে তখন যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করা কঠিন।
এর আগে, ইউক্রেন ও রাশিয়া বলেছিল তারা কিছু পূর্বশর্ত ছাড়া আলোচনার টেবিলে আসবে না। ইউক্রেন চায় তার সীমানা ১৯৯১ সালে যেমন ছিল তা পুনঃস্থাপিত হোক, যা ক্রেমলিন গভীরভাবে বিরোধী।
মস্কোর দাবি আলোচনার টেবিলে আসতে হলে কিয়েভকে তার দেশের ‘নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতা’ মেনে নিতে হবে।
পুতিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আপাতত ইউক্রেনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। তিনি বলেন, চলতি মাসের শুরুতে ক্রিমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণের পর মস্কো ইউক্রেনে কিছু প্রতিরোধমূলক হামলা চালিয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত জুনে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্য নিয়ে সাতটি আফ্রিকান দেশের নেতা মিলে এক শান্তি মিশন শুরু করেছিল। প্রথমে ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং পরে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করছিলেন তারা।
এই প্রতিনিধিদলে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, সেনেগাল, কঙ্গো-ব্রাজাভিল, কমোরোস, জাম্বিয়া আর উগান্ডার নেতারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা যখন আফ্রিকান শান্তি মিশনের কথা ঘোষণা করেছিলেন , তখন তিনি কোন সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব বা সময়সীমার কথা বলেননি।
বরং দেখা যাচ্ছে এরকম সম্ভাব্য শান্তি-স্থাপনকারীদের ময়দানে ইতিমধ্যেই অনেক লোকের ভিড় জমে গেছে। চীন ও তুরস্কের নেতারা এবং পোপ ফ্রান্সিস - এরকম অনেকেই আছেন সেখানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কূটনীতিক ও বিশ্লেষক কিংসলে মাখুবেলা প্রশ্ন তোলেন, আফ্রিকান নেতাদের এই উদ্যোগের 'কৌশলগত কেন্দ্রবিন্দুটা কী? এটা স্পষ্ট নয়। এটা কি আফ্রিকান রাষ্ট্রপ্রধানদের একটা ফটো-অপ?
আন্তর্জাতিক সংঘাতের ক্ষেত্রে সাধারণত আফ্রিকার নেতাদের এরকম সক্রিয়তা দেখা যায় না। সেদিক থেকে এই উদ্যোগ একটা বিরল ঘটনা। কারণ ইউক্রেন সংকটকে সাধারণত দেখা হয় রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যেকার একটা সংঘাত হিসেবে। খবর- বিবিসি।