ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন-এই দুজনের কেউই শান্তি আলোচনায় প্রস্তুত নন-বলে মন্তব্য করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।
এদিকে আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইউক্রেনের ওডেসায় রাশিয়ার হামলার পর একটি ফোন কলে পুতিনকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, তিনি কৃষ্ণ সাগরের শস্যচুক্তি পুনঃনবায়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
অন্যদিকে, ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র রোমানিয়ার থেকে অল্প দূরে অবস্থিত দানিউব নদীর তীরে ইউক্রেনের ইজমাইল বন্দরের স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
বিবিসি জানিয়েছে, ওই ড্রোন হামলায় বন্দরটির একটি শস্য গুদাম, একটি যাত্রী ভবন এবং শস্য লোড করার লিফট-সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শস্যচুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইউক্রেনের বন্দরগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা শুরু করেছে রাশিয়া।
আজ বুধবার ভোরে ইজমাইল বন্দর এলাকায় মস্কোর ড্রোন হামলার কারণে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
রোমানিয়ার কাছাকাছি ইউক্রেনের অবকাঠামোতে রাশিয়ার ক্রমাগত আক্রমণকে অগ্রহণযোগ্য বলে নিন্দা করেছেন রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্লাউস ইওহানিস।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী গত রাতে বলেছিল, রাশিয়ার ড্রোনগুলো দানিউব নদীর দিকে যাচ্ছে, যেখানে ইজমেল এবং রেনি নামে ইউক্রেনের দুটি বন্দর রয়েছে।
ওডেসার আঞ্চলিক নেতা ওলেহ কিপার বলেছেন, জরুরি পরিষেবাগুলো রাশিয়ার সর্বশেষ হামলার স্থানে কাজ করছে এবং কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত ক্ষতি হয়েছে।’
বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের আঞ্চলিক প্রধান সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছেন যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, বেশ কয়েকটি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, একটি লিফট, জেলা প্রসিকিউটর একটি কার্গো টার্মিনাল, একটি গুদামঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার ড্রোন রেনি বন্দরের শস্য গুদামগুলোতেও হামলা চালিয়েছিল।
রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্লাউস ইওহানিস বুধবার বলেছেন, রোমানিয়ার এত কাছাকাছি হামলাগুলো ছিল যুদ্ধাপরাধের শামিল। ওই হামলা অভাবীদের কাছে ইউক্রেনের খাদ্য পণ্য স্থানান্তর করার সামর্থ্যকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
রাশিয়া এর আগে কৃষ্ণ সাগরের ওডেসা এবং চোরনোমর্স্কের বড় বন্দরগুলোতে আক্রমণ করেছিল।
সেখানকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই হামলায় ৬০ হাজার টন শস্য ধ্বংস হয়েছে।
গত জুলাইয়ে শস্য চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পর ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরের বন্দর অভিমুখে যে কোনো জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করার হুমকি দিয়ে মূলত একটি নৌ অবরোধ আরোপ করে রাশিয়া।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম প্রধান গম এবং ভুট্টা রপ্তানিকারক দেশ এবং দেশটির বেশিরভাগ চালান দেশের কৃষ্ণ সাগরের বন্দরের মাধ্যমেই পাঠানো হয় ।
এখন যেহেতু ইউক্রেন তার প্রধান কৃষ্ণ সাগর বন্দরগুলেঅ ব্যবহার করতে অক্ষম, তাই ছোট আকারের দানিউবের বন্দরগুলো তার রপ্তানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
শস্যচুক্তি থেকে রাশিয়ার প্রত্যাহারের পরপরই বিশ্ববাজারে গমের দাম বেড়ে যায়।
এখন বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। এই উদ্বেগ বিশেষ করে দরিদ্র আফ্রিকান এবং এশিয়ান দেশগুলোর জন্যই বেশি প্রযোজ্য বলে মনে করা হচ্ছে।