কোরআন পোড়ানোর ঘটনা নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করার পর ডেনমার্কের পুলিশ সম্প্রতি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কঠোর করছে।
দেশটির আইন মন্ত্রণালয় বলেছে, সপ্তাহের শুরুতে সুইডেনের সিদ্ধান্তের পর সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, ডেনমার্কের আইন মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘কর্তৃপক্ষ আজ উপসংহারে পৌঁছেছে যে, বর্তমান হুমকির প্রতিক্রিয়া জানাতে ডেনমার্কে কারা প্রবেশ করছে তার উপর নজরদারি বাড়াতে এই সময়ে ওই পদক্ষেপ প্রয়োজনীয়।’
প্রাথমিকভাবে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত থাকবে।
ডেনমার্ক এবং সুইডেনে কট্টর ডানপন্থীকর্মীরা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থের বেশ কিছু কপি পুড়িয়েছে, যা মুসলিমবিশ্বে ক্ষোভ উস্কে দিয়েছে।
মুসলিমবিশ্বে দেশ দুটির সরকারকে এই ধরনের কাজ নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে।
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোককে রাসমুসেন গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘কোরআন জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ভীষণ আপত্তিকর এবং বেপরোয়া কাজ কিছু ব্যক্তির দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। এই ব্যক্তিরা ডেনিশ সমাজের মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবশ্যই মত প্রকাশের স্বাধীনতা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে পড়ে এবং এই মত প্রকাশ এমনভাবে করা উচিত যা অন্যকে আঘাত করে না।’
উল্লেখ্য, সুইডেনের পদক্ষেপ অনুসরণ করে ডেনমার্কে আগত যাত্রীদের অধিকতর তল্লাশিসহ সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডেনিশ কর্তৃপক্ষ ।
তবে, উভয় দেশের সরকারই কোরআন পোড়ানোর নিন্দা করে বলেছে, তারা নতুন আইন বিবেচনা করছে, যা এই ধরনের কাজ থামাতে পারে।
তবে দেশ দুটির সরকার সমালোচকরা বলছেন, এই ধরনের যেকোনও সিদ্ধান্ত তাদের সংবিধানে সুরক্ষিত বাক স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করবে।
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন গত মঙ্গলবার দেশটির আইন প্রসঙ্গে বলেছেন, কুরআন বা অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানো বা অপবিত্র করা নিষিদ্ধ করার কোনও আইন নেই। তিনি বলেন, এর ফলাফল ভয়ঙ্কর হতে পারে।
ক্রিস্টারসন বলেন, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার অর্থ হলো অপরাধ করতে বা জনগণের নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটাতে সুইডেনে আসা মানুষদের প্রতিরোধ করা।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি) গত মাসে বেশ কয়েকটি অগ্নিসংযোগের পর ধর্মীয় ঘৃণা ও ধর্মান্ধতার বিষয়ে একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
কোরআন ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র গ্রন্থ। মুসলমানরা এটিকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে পাঠ করে। তাই তারা কোরআন পোড়ানোকে তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের অপবিত্রতা এবং একটি অগ্রহণযোগ্য কাজ হিসেবেই দেখে।