হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা হামলার ৭৮তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে জাপান। এ উপলক্ষে পশ্চিম জাপানের হিরোশিমার পিস মেমোরিয়াল পার্কে রোববার (৬ আগস্ট) একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।
বোমা ফেলার সময়কে নির্ধারণ করে স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে শান্তির ঘণ্টা বাজানোর মাধ্যমে এ অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। মৃতদের স্মরণ করে পালন করা হয় দীর্ঘ এক নীরবতা।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতা অকল্পনীয়। রাশিয়ার হুমকি পারমাণবিক অস্ত্র বিলুপ্তির পথকে বাধাপ্রাপ্ত করছে। তবে এটিকে সতর্কবার্তা হিসেবে নিয়ে আন্তর্জাতিক মাধ্যমগুলো পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই। তিনি গ্রুপ অফ সেভেনের (জি৭) নেতাদের পারমাণবিক অস্থ বিলুপ্তের আহবান জানান এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবেলায় পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের ধারণাকে ‘মূর্খতা’ বলে অবহিত করেন।
প্রসঙ্গত, গত মে মাসে হিরোশিমায় জি৭ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জি৭ নেতারা পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণে তাদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে একটি বিবৃতি জারি করেছে। জি৭ এর ভুক্ত দেশগুলো হলো, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, কানাডা ও জাপান।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ আয়োজনকে সমর্থন করে বলেন, বিশ্ব নেতারা এ শহরটি এবং সেখানকার মানুষদের সাথে কথা বলেছে। পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতা কিছুটা হলেও আঁচ করেছে, যা তাদেরকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে উদ্বুদ্ধ করেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ প্রান্তে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট, ইউএস বি-২৯ যুদ্ধবিমান এনোলা গে থেকে হিরোশিমায় 'লিটল বয়' নামক একটি পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালিত এ হামলা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ জনসংখ্যার শহরটিকে ধ্বংস করে দেয়। নিহিত হয় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। আহতদের মধ্যে তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে অসুস্থ হয়ে মারা যায় আরও কয়েক হাজার মানুষ। পরবর্তীতে ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে আরেকটি পারমাণবিক হামলা চালানো হলে ১৫ আগস্ট জাপান আত্মসমর্পণ করে।