আসাম রাইফেলসকে সরাতে ৪০ মৈতৈ বিধায়কের চিঠি

ভারত, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 18:49:51

ভারতের অশান্ত মণিপুরে পক্ষপাতিত্বের কারণে শুরু থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে আসাম রাইফেলস। ওই রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে মোতায়েন করা এই নিরাপত্তা বাহিনী তাই স্থানীয়দের আস্থা হারিয়েছে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, এবার ওই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেই রাজ্যটি থেকে আসাম রাইফেলসকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলল মণিপুরের ৪০ জন মৈতেই বিধায়ক। নিজেদের দাবির কথা জানিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও লিখেছেন তারা।

চিঠিতে আসাম রাইফেলসের বদলে মণিপুরে কোনও ‘বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তা বাহিনী’ মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন ওই তারা। মণিপুর সহিংসতার শুরুর দিন থেকেই বার বার বিতর্কে জড়িয়েছে আসাম রাইফেলস।

তাদের বিরুদ্ধে কুকিদের মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন মৈতৈরা। মৈতৈ সংগঠনগুলোর অভিযোগ, আসাম রাইফেলসের প্রত্যক্ষ মদতেই মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে কুকিদের অনুপ্রবেশ চলছে মণিপুরে।

কিছুদিন আগে মণিপুর পুলিশও অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিল আসাম রাইফেলসের বিরুদ্ধে। মৈতৈদের উপরে অত্যাচারে অভিযুক্ত কুকি সংগঠনগুলোকে আড়়াল করায় অভিযুক্ত হয়েছেন আসাম রাইফেলসের কর্মকর্তারা।

যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে আসাম রাইফেলস।

কিছুদিন আগেই মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলার মৈরাং লামখাইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পুলিশ চৌকি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আসাম রাইফেলসের জওয়ানদের। তার পরিবর্তে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআরপিএফকে।

সহিংসতা কবলিত সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার নৃশংস আচরণ করার অভিযোগে আসাম রাইফেলসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভও হয়েছে মণিপুরে। ওই বাহিনীর বিরুদ্ধে মিছিলও হয়েছে বিষ্ণুপুর এবং চূড়াচাঁদপুর জেলায়।

প্রসঙ্গত, বিগত ৩ মে থেকে জাতিগত সহিংসতার সাক্ষী হয়ে আছে মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা।

এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে।

এরই মধ্যে সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি জঙ্গিরা অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরই মধ্যে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে সেই রাজ্যে।

ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মৈতৈ উপজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে, তাদের তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধিতা করছে স্থানীয় আদিবাসীরা।

এই অবস্থার মধ্যে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়।

এদিকে তফসিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা।

এদিকে, ওই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতৈদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও।

এ সম্পর্কিত আরও খবর