ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সহিংসতা হয়েছে দাবি করে শনিবার (১২ আগস্ট) সরব হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বিজেপির কোলাঘাটে পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন। মোদি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সহিংসতার সাক্ষী পুরো দেশ। এরপরই এক অডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রীর ওই দাবি নস্যাৎ করে দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক কথায়, ওই অডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রীকে তুলোধুনা করেছেন তিনি।
দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির করা সমস্ত অভিযোগের জবাব কড়ায় গণ্ডায় ফিরিয়ে দেন এই তৃণমূল প্রধান।
এদিকে, শনিবার কোলাঘাটে বিজেপির পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় উপর্যুপরি সহিংসতার ঘটনা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন। ওই সম্মেলনে রয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা।
ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে জয়ের পরও তৃণমূল প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। রক্ত নিয়ে হোলি খেলা শুরু করেছে। যারা নিজেরা ভোট লুঠের অভিযোগ করত, যারা নিজেদের গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন বলে দাবি করত, সেই তৃণমূলের লোকেদেরই টিভির পর্দায় ব্যালট বাক্স নিয়ে পালাতে দেখা গেছে। ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। গুন্ডাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে। লোকসভা নির্বাচনে সেটা হবে না।’
ওই সব অভিযোগের বিপরীতে মোদিকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়েনি মমতা। তিনি অডিও বার্তায় বলেন, ‘কোনও প্রমাণ ছাড়াই কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী। উনি চান দেশবাসী কষ্টে ভুগুক, মারা যাক, শুধুমাত্র বিজেপির সমৃদ্ধি হোক। বিজেপি এই চিন্তাধারা দিয়ে সাধারণ মানুষকে বারবার বোকা বানাতে পারবে না। আপনি কিছু সময় মানুষকে বোকা বানাতে পারেন, সারাজীবন নয়। আয়নায় নিজের মুখ দেখুন, চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম।’
পিপা নিউজ জানিয়েছে, এ ছাড়াও রাফেল চুক্তি থেকে শুরু করে নোট বাতিল, মণিপুরের চলমান জাতি দাঙ্গায় নারীদের ধর্ষণের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন মমতা। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মুখে দেশবাসীর স্বার্থরক্ষার কথা বলেন। আর কাজে সেটাই করেন যাতে বিজেপির স্বার্থ রক্ষিত হয়। দেশের মানুষ খেতে পেল কি না, তাতে বিজেপির কিছু আসে যায় না। বিজেপি দেশের স্বার্থে কোনও কাজ করে না। শুধু রাজনৈতিক হাওয়া তুলতে জানে। অন্যকে জ্ঞান না দিয়ে নিজেদের আচরণ ঠিক করুন। আপনার চারপাশে থাকা দুর্নীতিগ্রস্ত লোকেদের বিরুদ্ধে তো কোনও ব্যবস্থা নেননি। দুর্নীতি থেকে নারী নির্যাতন, শ্লীলতাহানি সবেতেই এরা জড়িত। বিজেপির জমানায় সারা দেশের মানুষ দুর্ভোগে আছেন। তাদের রক্ষা করতে টিম ইন্ডিয়া তৈরি হয়েছে। তাতেই বিভ্রান্ত হয়ে নিজেদের কুকর্ম ঢাকতে মিথ্যে অভিযোগ করছেন প্রধানমন্ত্রী। আবাস থেকে শুরু করে রাফাল, ভুলে যাবেন না। আপনাদের কর্মীরা বাংলাতে ১৬–১৭ জনকে খুন করেছে। আর আপনি হাওয়া দিচ্ছেন!’