ভারী বর্ষণের কারণে ভূমিধসে বিধ্বস্ত ভারতের হিমাচল প্রদেশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু।
রবিবার (১৩ আগস্ট) রাতে সোলান জেলায় সাত জন এবং শিমলায় একটি শিবমন্দিরে ধসে এখনও পর্যন্ত নয় জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে দুই দিনে মোট ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে ওই রাজ্যে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, শিমলার শিবমন্দিরের ভেঙে পড়া কংক্রিটের নীচে এখনও চাপা রয়েছেন ১৫-২০ জন পুণ্যার্থী। তাই মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে শিমলার সামার হিলের ওই শিবমন্দিরে অন্তত ৫০ জন পুণ্যার্থী জড়ো হয়েছিলেন। ভারী বর্ষণের কারণে মন্দিরের একাংশ হঠাৎ করেই ধসে পড়ে।
তখন কংক্রিটের নীচে চাপা পড়েন মন্দিরের ভিতরে থাকা পুণ্যার্থীদের অনেকে। এখনও পর্যন্ত নয় জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুরু হয়েছে উদ্ধার কাজও।
হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী টুইট করে এই দুঃসংবাদ জানিয়েছেন। শিমলার ডেপুটি কমিশনার আদিত্য নেগি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ভূমিধসের ঘটনায় অনেক মানুষ মাটিচাপা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সোলানের ডিভিশনাল কমিশনার মনমোহন শর্মা জানিয়েছেন, রবিবার (১৩ আগস্ট) রাতে প্রবল বৃষ্টির কবলে পড়ে হিমাচলের সোলান এলাকার জাডোন গ্রাম। সেখানে জলের তোড়ে ভেসে যায় একাধিক বাড়ি। এই ঘটনায় মোট সাত জনের মৃত্যু হয়ে। উদ্ধার করা হয়েছে ছয় জনকে।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী সুখু হিমাচলের সাধারণ জনগণকে বাড়ির ভেতরে থাকার এবং নদীর ধারে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এনডিটিভির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জনগণকে ভূমিধসপ্রবণ এলাকাগুলো থেকে দূরে সরে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি এই সঙ্কটময় সময়ে পর্যটকদের ওই রাজ্যে প্রবেশ না করার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি।
কয়েকদিন ধরেই হিমাচলে ভারী বৃষ্টিপাত চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেড়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে নদীর জলস্তর। ফুঁসছে খরস্রোতা বিপাশা নদী। মুহুর্মুহু পাহাড়ি ধসে ব্যাহত হয়েছে জনজীবন।
বৃষ্টি এবং ভূমিধসের কারণে হিমাচলে এখনও পর্যন্ত ৭৫২টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবং পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা ভেবে হিমাচলের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে।
বৃষ্টিপাতের ফলে হিমাচলের মানুষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এই তাণ্ডব কবে বন্ধ হবে, এই প্রশ্নই এখন সেখানকার বাসিন্দাদের মনে। কিন্তু, আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, হিমাচলে এখনই থামবে না বৃষ্টিপাত। হিমাচলের চাম্বা, কাংড়া, হমিরপুর, মান্ডি, বিলাসপুর, সোলান, শিমলার বিচ্ছিন্ন জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে কুলু এবং সিরমাউরে।