মণিপুরে গোষ্ঠীভিত্তিক সহিংসতার জেরে এবার বিক্ষোভে কাঁপলো ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। উপজাতি কুকি-জ়ো গোষ্ঠীর নারীরা মণিপুরের পাহাড়ি এলাকার জেলাগুলোর জন্য জন্য পৃথক প্রশাসনের দাবিতে ওই বিক্ষোভ করেন বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।
দিল্লির যন্তর মন্তরে শুক্রবারের (১৮ আগস্ট) ওই বিক্ষোভ সমাবেশে উপজাতি নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, কেন্দ্রীয় সরকার সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যে ত্রাণসামগ্রী পাঠাচ্ছে, তা ঠিকভাবে বণ্টন করছে না মেইতেই প্রভাবিত মণিপুর সরকার। তাই নিরপেক্ষভাবে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ তদারকির জন্য উপজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলোর জন্য পৃথক প্রশাসন প্রয়োজন।
মেইতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মণিপুরে তাদের সুরক্ষা দিতে পারবে না বলে বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন ওই রাজ্যের কুকি বিধায়করা। তাই কুকি-জ়ো উপজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পৃথক মুখ্যসচিব এবং পুলিশের মহানির্দেশক (ডিজি) নিয়োগের দাবি জানান তারা। মণিপুরের ১০ কুকি-জ়ো বিধায়কের স্বাক্ষর ছিল ওই চিঠিতে। তাদের মধ্যে সাতজনই শাসকদল বিজেপির। ওই চিঠিতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের কার্যকলাপের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেন তারা।
এই ঘটনার জেরে পদ্মশিবিরের ফের আশঙ্কা বৃদ্ধি পেলো বলেই ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার কেন্দ্র সরকারকে চিন্তায় ফেলেছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম শক্তিশালী জঙ্গিগোষ্ঠী এনএসসিএন(আইএম)। মণিপুরের উখরুল, সেনাপতির মতো জেলাগুলোতে সক্রিয় ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ওই সে রাজ্যের নাগা বিধায়কদের ভর্ৎসনা করা হয়েছে। সম্প্রতি, ওই রাজ্যের ৩২ জন মেইতেই বিধায়কের সঙ্গে জোট বেঁধে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন ৮ নাগা বিধায়ক। চিঠিতে দাবি করা হয়েছিল, কুকি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি ভেঙে দেওয়ার।
পাশাপাশি, কুকি অধ্যুষিত পাঁচ জেলার পৃথক প্রশাসনের দাবিরও বিরোধিতা করা হয়েছিল ওই চিঠিতে। কেন্দ্রের সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে থাকা নাগা জঙ্গিগোষ্ঠী এনএসসিএন (আইএম) জানিয়েছে, ওই চিঠির সঙ্গে নাগার বাসিন্দাদের স্বার্থের কোনও সম্পর্ক নেই। তাই ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করা উচিত হয়নি নাগা বিধায়কদের। বুধবার কুকি বিধায়কেরা ওই পাঁচ জেলায় তাদের উপজাতিভুক্ত পুলিশ সুপার নিয়োগেরও দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
শুক্রবারের বিক্ষোভে উপজাতি নারী সংগঠনও মণিপুর পুলিশের কমান্ডো বাহিনীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ তুলেছে।