নাইজারে তিন বছর ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা পোষণ করেছে জান্তা সরকার। এরপর বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির অভ্যুত্থানকারীদের নেতা জেনারেল আবদুররহমানে চিয়ানি।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর জোট দ্য ইকোনমিক কমিউনিটি অব ইস্ট আফ্রিকান স্টেটস বা ইকোওয়াসের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে এই প্রস্তাব দেন চিয়ানি। এ সময় তিনি সতর্ক করে বলেন, তার দেশে আক্রমণ করলে সহজে পার পাওয়া যাবে না। খবর: আল জাজিরা।
শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে নাইজারের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে জেনারেল চিয়ানি এই পরিকল্পনার কথা জানান। তবে তিন বছর পর কীভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সামরিক পরিষদে বিষয়টি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জেনারেল চিয়ানি বলেন, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর দ্য সেফগার্ড অব হোমল্যান্ড বা নাইজারের জনগণ যুদ্ধ চায় না। সংলাপের দরজা সবসময় উন্মুক্ত। শনিবার নাইজারের রাজধানী নিয়ামতে ইকোওয়াসের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন তিনি।
ভাষণে জেনারেল চিয়ানি আরও বলেন, তবে আমাদের পরিষ্কার কথা: যদি আমাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করা হয়, কিছু লোক যেমনটা ভাবছে যে— সহজে পার পেয়ে যাবে, সেরকমটা কখনোই হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমি একটি বিষয় নিশ্চিত করতে চাই যে, আমাদের উদ্দেশ্য ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা নয়। আমি আরও নিশ্চিত করতে চাই যে, আমরা সংলাপের জন্য প্রস্তুত।
এদিকে, নাইজারের জান্তা সরকারের প্রতি বিরল সমর্থন দেখাচ্ছে দেশটির সাধারণ মানুষ। দেশটিতে গণতন্ত্র ফেরাতে প্রয়োজনে সামরিক হস্তক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর সংগঠন ইকোয়াস। যা প্রতিরোধে আগ্রহ দেখাচ্ছে নাইজারের হাজার হাজার সাধারণ নাগরিক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বেচ্ছাসেবী হওয়ার জন্য নিবন্ধন করছেন তারা।
দেশের প্রয়োজনে তারা প্রত্যেকেই হাতে অস্ত্র তুলে নিতে প্রস্তুত। এজন্যই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নিবন্ধন করতে ভিড় জমিয়েছেন নাইজারের বেসামরিক নাগরিকরা।
রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নাইজারের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। পশ্চিম আফ্রিকার নেতারা প্রয়োজনে দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। যদিও, জান্তা সরকারের প্রতি সমর্থন রয়েছে দেশটির অনেক সাধারণ মানুষের।
গত ২৬ জুন নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমেকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। নাইজারের সামরিক বাহিনীর এই অভ্যুত্থানের জবাবে দেশটির ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং ইকোওয়াসের সদস্য দেশগুলোকে সৈন্য প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় যাতে স্বল্পতম সময়ে নাইজারে সামরিক অভিযান চালানো যায়। এমনকি হামলার জন্য সম্ভাব্য একটি তারিখও নির্ধারণ করা হয়ে গেছে।