ইউক্রেন যুদ্ধকে সমর্থন এবং বিশ্বব্যাপী মার্কিন আধিপত্যকে ভারসাম্যে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্রিকস নেতাদের প্রশংসা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার (২৩ আগস্ট) ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি ওই প্রশংসা করেন।
ব্রিকস নেতাদের উদ্দেশ্যে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে বক্তৃতা দেওয়ার সময় পুতিন ক্রেমলিনের বর্ণনার পুনরাবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে মস্কোর আক্রমণ পশ্চিমা শক্তি দ্বারা একটি সাম্রাজ্যবাদী ভূমি দখল হিসাবে নিন্দা করা হলেও এটি কিয়েভ এবং ওয়াশিংটনের শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য রাশিয়ার বাধ্যতামূলক একটি প্রতিক্রিয়া ছিল।
ইউক্রেনের পূর্ব অংশের কথা উল্লেখ করে পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেনে আমাদের ক্রিয়াকলাপ শুধুমাত্র একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য। সেটি হলো, ডনবাসে বসবাসকারী লোকদের বিরুদ্ধে পশ্চিমারা যে যুদ্ধ শুরু করেছিল, তা শেষ করা।’
এনডিটিভি জানিয়েছে পুতিন আরও বলেন, ‘আমি লক্ষ্য করে দেখেছি যে, বিশ্বে মার্কিন আধিপত্য বজায় রাখার আকাঙ্ক্ষা ইউক্রেনকে গুরুতর সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের নিন্দা করা থেকে বিরত থাকা দেশগুলোর একটি ফোরামে কথাগুলো বলেন পুতিন।
এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলোকে ভোঁতা করার লক্ষ্যে ব্রাজিল, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ব্রিকসভুক্ত অন্য দেশগুলো রাশিয়াকে অধিক গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেছে।
রাশিয়া বারবার বলেছে, তারা ১৮ মাসের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আলোচনার জন্য উন্মুক্ত। কিন্তু, আলোচনায় বসার ক্ষেত্রে শর্ত হিসাবে ইউক্রেন তার পুরো ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার এবং রাশিয়ার সেনাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বক্তৃতার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ব্রিকস সদস্যরা সংঘাতের অবসান ঘটানোর প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে যাবে।
ব্রিকসকে শক্তিশালী করে মার্কিন আধিপত্যকে ক্ষুণ্ন করার মাধ্যমে একটি বহুমুখী বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গির কথাও বক্তৃতায় বলেছেন পুতিন।
ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) পুতিনের বিরুদ্ধে মার্চ মাসে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। যে কারণে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে পারেননি।
রাশিয়া অভিযোগটিকে আপত্তিজনক বলে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এই পদক্ষেপের কোনও আইনি অর্থ নেই। কারণ, রাশিয়া আইসিসির সদস্য নয়। কিন্তু, দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিসির সদস্য বিধায় যদি পুতিন সেদেশ ভ্রমণ করতেন, তবে তাকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য করা হতো।