ইউক্রেনের নৌবাহিনী এবং সামরিক গোয়েন্দাদের একটি ইউনিট ক্রিমিয়ায় অবতরণ করে রাতারাতি একটি বিশেষ অভিযান চালিয়েছে বলে দাবি করেছে কিয়েভ। আল-জাজিরা জানিয়েছে, ওই বিশেষ অভিযানের খবর নিশ্চিত করেছে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা পরিষেবা বিভাগ (এইচইউআর) এক বিবৃতিসহ বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) পোস্ট করা একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিওতে ক্রিমিয়ার উপকূলরেখার কাছাকাছি রাতে চলাচলকারী তাদের একটি ছোট মোটরবোটকে দেখিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন বৃহস্পতিবার সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছ থেকে তার স্বাধীনতা লাভ উদযাপন করছে।
ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, তাদের বিশেষ ইউনিটটির ল্যান্ডিং পয়েন্টটি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপের পশ্চিম প্রান্তে ছিল।
এইচইউআর জানিয়েছে, ওয়াটারক্রাফ্টে বিশেষ ইউনিট ওলেনিভকা এবং মায়াক বসতি এলাকায় তীরে অবতরণ করেছে।
এইচইউআর অপারেশনের লক্ষ্য নির্দিষ্ট না করে জানিয়েছে, সমস্ত লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে এবং ওই অভিযানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।শত্রুরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং শত্রুর সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়েছে। এইচইউআর বলেছে, ক্রিমিয়াতে আবার ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় পতাকা উড়েছে।
কিয়েভে ক্রিমিয়া বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত এখনও দখলদারের অধীনে থাকা ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের অন্যান্য অংশের মতো দখলমুক্ত করা হবে।
গত মাসে মস্কো রাশিয়ানির্মিত ক্রিমিয়ান সেতুতে হামলার জন্য ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেছিল, যা ২০২৩ সালের জুলাইয়ে একটি বিস্ফোরণসহ একাধিক ঘটনার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, ক্রিমিয়া একবার ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে ফিরে এলে এটি ইউক্রেন এবং বিশ্ব অর্থনীতির অংশ হবে।
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা এই ধরনের প্রথম অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা ইউক্রেনের পরে ক্রিমিয়ায় প্রবেশের জন্য প্রস্তুত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রথম নথিতে স্বাক্ষর করছি।’
এদিকে, রাশিয়ার এক সামরিক পাইলটকে এমআই-৮ হেলিকপ্টারসহ ইউক্রেনের একটি বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করার জন্য প্রলুব্ধ করার খবর জানিয়েছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কোর আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন রাশিয়ার অধিভুক্ত উপদ্বীপে একাধিক আক্রমণ শুরু করেছে এবং এলাকাটিকে দখলতৃত হিসাবে উল্লেখ করেছে।
কিন্তু, রাশিয়া ক্রিমিয়া পরিত্যাগ করার কোনও লক্ষণই প্রকাশ করেনি। উল্টো তারা ইউক্রেনের লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ক্রিমিয়াকে ব্যবহার করেছে।
মস্কো বলেছে, রাশিয়া বাহিনী ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করার পরে অনুষ্ঠিত একটি গণভোট দেখায় যে, ক্রিমিয়ার বাসিন্দারা রাশিয়ার অংশ হতে চায়। যদিও মস্কোর ওই এই দাবি ইউক্রেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তীব্রভাবে অস্বীকার করেছে।