আসন ভাগাভাগি নিয়ে ‘ধীরে চলো’ নীতিতে কংগ্রেস

ভারত, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-04 16:36:43

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে রাহুল গান্ধী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক এবং মুম্বাইয়ে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সম্মেলন-এই দুই জায়গাতেই দ্রুত আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের উপরে চাপ বাড়িয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

কিন্তু, কংগ্রেস শিবির থেকে আসা প্রাথমিক সঙ্কেত দেখে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের অনুমান, এ বিষয়ে আপাতত ‘ধীরে চলো’ নীতিতেই চলবে কংগ্রেস। তারা বিস্তারিত কথা বলবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য-নেতাদের সঙ্গে।

একইভাবে, অন্য কয়েকটি আঞ্চলিক বিরোধী দলের নেতৃত্বও এমনটাই আঁচ করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর।

টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, তড়িঘড়ি আসন সমঝোতা সেরে ফেলে এখন থেকেই দলের নেতা-কর্মীদের রাজ্যে-রাজ্যে বসিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নয় কংগ্রেস। তাতে সাংগঠনিক ক্ষতি হবে।

তার উপরে, সামনেই পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন। যার মধ্যে অন্তত তিনটিতে জেতার বিষয়ে আশাবাদী কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ফলে, তখন সংখ্যার হিসাবে আরও শক্তিশালী হয়ে সব দলের সঙ্গে দর কষাকষির টেবিলে বসতে চাইছে কংগ্রেস।

কিন্তু, এই আঁচ পেয়ে তৃণমূলের এক শীর্ষ পর্যায়ের নেতার বক্তব্য, ‘সেক্ষেত্রে আমরা কংগ্রেসের লেজ ধরে চলব না।’

এদিকে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তৃণমূল কংগ্রেস কর্তৃক প্রস্তাবিত ১৫ তারিখের মধ্যে আসন রফা না হলে, এই জোটের ভবিষ্যৎ ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতেও পারে।

তৃণমূলসহ বিরোধীদের একাংশ চেয়েছিলেন, মুম্বাই বৈঠকেই আসন সমঝোতার তারিখ নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হোক। কিন্তু, কংগ্রেসের অনুৎসাহে তা হয়নি।

সূত্রের খবর, মুম্বাই বৈঠকে দৃশ্যতই করজোড়ে জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার রাহুলকে বলেছিলেন, ‘আপনারা যত দ্রুত সম্ভব আসন সমঝোতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করুন। দেরি করবেন না।’

আমআদমি পার্টির (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরীওয়াল মাত্র ৩০ সেকেন্ড কথা বলে বুঝিয়ে দেন যে, আসন রফা না হলে এই ধরনের সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়া অর্থহীন।

তিনি শুধু এতটুকুই বলেছিলেন যে, ‘দ্রুত আসন সমঝোতা হোক। বাকি সব তারপরে হবে।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেকের বক্তব্য ছিল, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আসন বন্টনের ফয়সালা করা হোক। এটি বড়জোড় ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত পেছানো যেতে পারে। কিন্তু, এর বেশি দেরি করা অর্থহীন।

মমতা এটাও পরে বলেন যে, তিনি কথা নয় কাজে বিশ্বাসী। একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তিনি বিশ্বাস করেন, ভোটের আগে কোনও রাজনৈতিক জোটের প্রাথমিক কর্তব্যই হল দ্রুত আসন সমঝোতা সেরে ফেলা।

এক্ষেত্রে রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা হলো, বিহার, তামিলনাড়ু বা মহারাষ্ট্র নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সেখানে তো জোট রয়েছেই। কেরালাকেও কার্যত ‘ইন্ডিয়া’ জোট হিসাবের বাইরে রেখেছে।

কারণ, সেখানে সরাসরি বাম এবং কংগ্রেস মুখোমুখি লড়ছে। সেখানে কোনও আসন রফার প্রশ্ন নেই। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি এবং পঞ্জাবের পরিস্থিতি জটিল। এখানে আসন ফয়সলা করার বিষয়টি কঠিন। এই তিনটি রাজ্য মিলিয়ে ৬২টি আসন, যা একেবারে কম নয়।

রাজনৈতিক সূত্রের খবর, তৃণমূলের পক্ষ থেকে কংগ্রেসকে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে তারা সর্বোচ্চ দুটি আসন ছাড়তে পারে, এর বেশি নয়।

২০১৯ সালের লোকসভা এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের খতিয়ান সামনে তুলে এনে তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন দুটির বেশি আসন মমতা ছাড়বেন? দুটি আসন ছাড়ার বিনিময়ে মেঘালয় এবং আসামেও আসনের দাবি রাখছে বলেই তৃণমূল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর