ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে যে, তারা ক্রিমিয়ার কাছাকাছি কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি কৌশলগত গ্যাস এবং তেল উত্তোলনের প্ল্যাটফর্ম পুনরুদ্ধার করেছে, যা ২০১৫ সাল থেকে দখল করেছিল মস্কো।
ইউক্রেনীয় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার (জিইউআর) বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, কিয়েভ বাহিনী সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বয়কো টাওয়ার প্ল্যাটফর্ম পুনরুদ্ধার করে।
জিইউআর মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে জানিয়েছে, ইউক্রেন বাহিনী একটি অনন্য অভিযানে প্ল্যাটফর্মগুলো পুনরায় দখল করেছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, ইউক্রেনের জন্য বয়কো টাওয়ারের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের বিষয়টি কৌশলগত দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এর ফলে রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে তাদের সামরিক উদ্দেশ্যে বাস্তবায়নের ক্ষমতা হারিয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, ওই প্লাটফর্ম হাতছাড়া হওয়ায় রাশিয়া কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং এটি ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া পুনরুদ্ধারের পথে অনেক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
ওই অভিযান চলাকালীন ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনীর নৌকা এবং রাশিয়ার একটি ফাইটার জেটের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল বলে জানা গেছে।
ইউক্রেনের ওই দাবির বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য করেনি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
তবে মন্ত্রণালয়টি পূর্বে জানিয়েছিল যে, রাশিয়ার যুদ্ধবিমান সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এই অঞ্চলে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি স্পিডবোট ধ্বংস করেছে।
ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আন্তন গেরাশচেঙ্কো মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, বয়কো টাওয়ারের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, ওই টাওয়ার থেকেই রাশিয়া বাহিনী কৃষ্ণসাগরে সব ধরণের পর্যবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারি করতো।
আন্তন গেরাশচেঙ্কো বলেন, ‘ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দারা রাশিয়ানদের ওই টাওয়ারগুলো থেকে ছিটকে দিয়ে পর্যবেক্ষণ এবং গোয়েন্দা কার্যক্রমের সক্ষমতা থেকে মস্কোকে বঞ্চিত করেছে। এই টাওয়ারটি শুধুমাত্র কৃষ্ণসাগরের জন্য নয়, বরং উপকূলীয় এবং বিমান নজরদারির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
এদিকে, রাশিয়ার সামরিক ব্লগাররা সোমবার দাবি করেছেন যে, প্ল্যাটফর্মগুলো এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এক রকম পরিত্যাক্ত ছিল।
রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করার আগে ইউক্রেন কৃষ্ণসাগর থেকে প্রাকৃতিক গ্যাসের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ উত্তোলন করে ক্রিমিয়া ও ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডে সরবরাহ করেছিল।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ক্রিমিয়াকে মুক্ত করার জন্য যথাসাধ্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যেটি রাশিয়া ২০১৪ সালে দখল করে।
ইউক্রেনের নেতা আন্তর্জাতিক মিত্রদের প্রতি কিয়েভের ক্রিমিয়া পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, গ্যাস, তেল উত্তোলনের পাশাপাশি প্ল্যাটফর্মগুলো হেলিকপ্টার অবতরণ, স্থাপনার ঘাঁটি এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার অবস্থানের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।