বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় ও নির্বাচনী রণকৌশল কমিটির প্রথম বৈঠকে বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএমের কেউই হাজির থাকছেন না। দুই দলের অনুপস্থিতিতেই ইন্ডিয়ার শরিক দলগুলোর মধ্যে আসন বণ্টন প্রক্রিয়া, যৌথ নির্বাচনী প্রচার ও জনসভা নিয়ে আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, গত সপ্তাহে মুম্বাইয়ে ইন্ডিয়ার বৈঠকে সমন্বয় ও নির্বাচনী রণকৌশল কমিটি গঠন হয়। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে দিল্লিতে এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ারের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে এই কমিটির প্রথম বৈঠক।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে কমিটিতে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, অভিষেককে বুধবারই ইডি তলব করেছে। তৃণমূল প্রথমে অন্য কাউকে বৈঠকে পাঠানোর কথা ভেবেছিল। কিন্তু পরে শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন, অন্য কাউকে পাঠালে কমিটির গুরুত্বকে ছোট করা হবে।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে সেই কথাই কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল ও এনসিপির শারদ পাওয়ারকে জানানো হয়। রাজনৈতিক সূত্রের ব্যাখ্যা, অভিষেককে ইডির সমন পাঠানোর অর্থ এখন আর তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয়। ইন্ডিয়ার শীর্ষ কমিটির এক সদস্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ।
বুধবারের বৈঠকে হাজির না হলেও তৃণমূল চাইছে, রাজ্য পর্যায়ে বিজেপিবিরোধী দলগুলোর মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে একটি সূত্র দ্রুত তৈরি করে ফেলা হোক। সেটির ভিত্তিতে রাজ্য স্তরে ইন্ডিয়ার শরিক দলগুলোর মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যাক। তৃণমূল নেতৃত্ব এই বিষয়টি দ্রুত সেরে ফেলতে চাইছেন। কিন্তু, কংগ্রেস ও সিপিএম ধীরে চলো নীতি নিচ্ছে বলে তৃণমূল মনে করছে।
তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, অধিকাংশ রাজ্যেই বিরোধী শিবিরের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। জট মূলত পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব, দিল্লিতে। সেখানে গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলের ভিত্তিতে আসন বণ্টন হবে না কি লোকসভার ফলের ভিত্তিতে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশ প্রয়োজন। তারপরে যৌথ প্রচারে কোনও সমস্যা নেই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২ অক্টোবর রাজঘাট থেকে ইন্ডিয়ার ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ প্রকাশের প্রস্তাব দিয়েছেন। তাতে কী কী বিষয় থাকবে, তা নিয়েও বুধবার আলোচনা হবে। ২২ সেপ্টেম্বর ইন্ডিয়ার প্রচার কমিটি ও সংবাদমাধ্যম, সমাজমাধ্যম ও গবেষণা সংক্রান্ত কমিটির যৌথ বৈঠক হতে পারে।
ইন্ডিয়ার সমন্বয় কমিটির বৈঠকের সময়েই বিজেপি দিল্লিতে মধ্যপ্রদেশ-ছত্তীসগড়ের ভোট নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক ডেকেছে। আগে ইন্ডিয়ার বেঙ্গালুরুর বৈঠকের সময়ে বিজেপি দিল্লিতে এনডিএ-এর বৈঠক ডেকেছিল।
মুম্বাইয়ের বিরোধী বৈঠকের সময়ে মহারাষ্ট্রের বিজপি শরিকদের বৈঠক ডাকা হয়। এ সব ইন্ডিয়ার বৈঠক থেকে নজর ঘোরানোর কৌশল বলে কংগ্রেসের অভিযোগ।