ইউক্রেনের যুদ্ধকবলিত কিয়েভ ও লাভিভের কিছু দর্শনীয় স্থান ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার তালিকায় যুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ঐতিহ্য সংস্থা ইউনেস্কো।
ইউনেস্কোর মতে রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের দুটি শহরের প্রধান ঐতিহাসিক স্থান ধ্বংসের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজধানী কিয়েভের আইকনিক সেন্ট সোফিয়া গির্জা এবং শহরের কিয়েভ-পেচেরস্ক লাভরা মঠের মধ্যযুগীয় ভবন।
দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লাভিভের ঐতিহাসিক কেন্দ্রটিও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রকাশিত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার তালিকায় রয়েছে। এক বিবৃতিতে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, স্থান দুটি যুদ্ধের কারণে হুমকির সম্মুখীন হওয়ার ফলে সর্বজনীন মূল্যায়ন ও সুরক্ষার সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা পূরণ করছে না। শহর দুটিতে বোমা হামলার কারণে সৃষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর সুরক্ষায় একটি অনুস্মারক এবং আরও আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তার দ্বার উন্মুক্ত করবে বলে জানায় সংস্থাটি।
রাশিয়া -ইউক্রেন আগ্রাসন শুরুর প্রায় এক বছর পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউক্রেনের বন্দর শহর ওডেসা ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের তালিকায় যুক্ত হয়, যা তালিকার সর্বশেষ সংযোজন।
ইউক্রেনকে কৃষ্ণ সাগরের মাধ্যমে বিশ্বে শস্য রফতানি করার অনুমতি দিয়ে চুক্তি বাতিল করায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ওডেসা রাশিয়ার প্রচণ্ড বোমা হামলার মুখে পড়েছে বলে উঠে এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার বোমা হামলার সমালোচনা করেছে ইউনেস্কো। জুলাই মাসে, সংস্থাটি লাভিভের ঐতিহাসিক পুরাতন শহরের ঠিক বাইরে একটি ভবনে বোমা হামলার নিন্দা জানায়। শহরটি মধ্যযুগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ১৩ শতক থেকে ২০ শতক পর্যন্ত প্রশাসনিক, ধর্মীয় এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে এর বেশিরভাগ স্থাপত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রেখেছে। এটি ১৯৯৮ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছিল। সেইন্ট সোফিয়া গির্জাটি ১১ শতকে নির্মিত হয়েছিল। আধুনিক তুরস্কের হাগিয়া ডিজাইন করা হয়েছিল সোফিয়াকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য এবং তখন সেটি কনস্টান্টিনোপলের অংশ ছিল। সে সময়ের টিকে থাকা ভবনগুলোর মধ্যে একটি হলো এই গির্জা যা রুশ মধ্যযুগে পূর্ব ইউরোপে বাস করা জনগণের প্রাচীনতম সন্ন্যাস কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।
বর্তমানে ইউনেস্কোর ঝুঁকি তালিকায় ৫০টির বেশি স্থান রয়েছে। জাতিসংঘের ঝুঁকিপূর্ণ অন্যান্য স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে জেরুজালেমের ওল্ড সিটি, ভিয়েনার ঐতিহাসিক কেন্দ্র এবং ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপ সুমাত্রার গ্রীষ্মমন্ডলীয় রেইনফরেস্ট। তবে রাশিয়া জাতিসংঘকে আশ্বস্ত করেছে কিয়েভের সেন্ট সোফিয়া গির্জায় কোনো হামলা চালানো হবে না।