ওবসা(ছদ্মনাম) ইথিওপিয়ার ৩১ বছর বয়সী রাজনৈতিক শরণার্থী । ওবসা ২০১৭ সালে ফ্রান্সে এসেছিলেন।ইথিওপিয়া থেকে সুদান, লিবিয়া এবং তারপর ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালি পেরিয়ে তিনি ফ্রান্সে আসেন । তিনি এখন প্যারিসে একটি পূর্ণ-সময়ের চাকরি করেছেন। এতো বছর এই শহরে অবস্থান করেও তিনি স্থায়ী বাসস্থান খুঁজে পাননি। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।
মূলত রাজধানীতে অত্যন্ত উচ্চ ভাড়া খরচ এবং সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের সুযোগ খুব সীমিত হওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।প্যারিসে তার মতো গৃহহীন মানুষের সংখ্যা অনেক বলে জানান তিনি।
ফ্রান্স আসন্ন ২০২৪ সালের গ্রীষ্মের অলিম্পিকের প্রস্তুতির জন্য প্যারিস থেকে গৃহহীন লোকদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সরকার। প্যারিস সরকারের মতে, গত কয়েক মাস ধরে ফরাসি সরকার রাজধানীর জরুরী আশ্রয় পরিষেবাগুলোর উপর কিছুটা চাপ কমানোর পরিকল্পনার অংশ হিসাবে প্যারিসের গৃহহীনদের দেশের অন্যান্য অংশে স্থানান্তর ত্বরান্বিত করার জন্য কাজ করছে। প্রতি সপ্তাহে, ৫০ থেকে ১৫০ জনকে ফ্রান্স জুড়ে ১০টি অঞ্চলের যেকোনো একটিতে নিয়ে যাওয়া হয়।তবে, প্যারিস আয়োজিত অলিম্পিকের সাথে গৃহহীনদের স্থানান্তরের কোনো সংযোগের বিষয়ে সরকার অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
উল্লেখ্য আজ মঙ্গলবার(২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই ফরাসি রাজধানীর উত্তর-পূর্বে স্তালিনগ্রাদ মেট্রো স্টেশন থেকে আসা সরকারি বাসগুলো শত শত অভিবাসীদের সংগ্রহ করছে বলে সিএনএনের প্রতিবেদনে উঠে আসে।গৃহহীনদের কেউ কেউ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে, এই আশায় যে শেষ পর্যন্ত তাদের আবাসন দেওয়া হবে। তবে তাদের বেশিরভাগই প্যারিস ছেড়ে যেতে হবে বলে বিভ্রান্ত এবং ভীত এবং উদ্বিগ্ন।
২০২২ সালের স্থানীয় সমিতি এবং দাতব্য সংস্থাগুলোর একটি দাতা গোষ্ঠী ফেডারেশন অফ সলিডারিটি অ্যাক্টরস অনুসারে, প্যারিস অবস্থিত ইলে-ডি-ফ্রান্স অঞ্চলে প্রায় ৫০০০০ গৃহহীন লোককে রাতের বেলা হোটেলগুলোতে রাখা হয়েছিল।এমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো অনুষ্ঠানসূচি সামনে রেখেই আবাসন সংকট বিষয়ে সাময়িক তদারকি দেখা যায় বলেও হতাশা রয়েছে অনেক গৃহহীনদের মাঝে।র্
প্যারিস প্রিফেকচার সিএনএনকে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছে, দেশের প্রায় অর্ধেক গৃহহীন ইলে-ডি-ফ্রান্স অঞ্চলে বসবাস করে। এখানে তাদের দাতব্য প্রতিষ্ঠান, কাজের সুযোগ এবং ব্যক্তিগত সংযোগের অনুকূল পরিবেশও রয়েছে। আবাসন মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশে প্রতি রাতে ২ লাখ গৃহহীন লোকের মধ্যে ১ লাখই ইলে-ডি-ফ্রান্সে থাকে। সহজ কথায় প্যারিসে সবাই থাকার জন্য পর্যাপ্ত জরুরি আশ্রয়স্থল নেই বলে মন্তব্য করে সংস্থাটি।