সম্প্রতি এক গবেষণায় মেঘের পানিতে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি শনাক্ত করেছে জাপান গবেষকরা।মেঘের পানিকে নমুনায়ন হিসেবে পরীক্ষা করে প্রতি লিটার পানিতে ৬.৭ থেকে ১৩.৯ টুকরা মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা।
জাপানের গবেষকরা মেঘের মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিক উপস্থিত রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন।তবে উপাদানটি জলবায়ুকে কেমন ভাবে প্রভাবিত করছে যা এখনও পুরোপুরি বোঝা যায়নি।
এনভায়রনমেন্টাল কেমিস্ট্রি লেটারস জার্নালে প্রকাশিত এই সমীক্ষায় দেখা যায়, গবেষকরা প্রথমে জাপানের মাউন্ট ফুজি এবং মাউন্ট ওয়ামা পর্বতে আরোহণ করেন। পাহাড়ের চূড়াগুলোকে আবৃত করে রাখা কুয়াশা থেকে পানির নমুনায়ন সংগ্রহ করেন। তারপর নমুনায়নকৃত পানির ভৌত এবং রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যসমূহ নির্ধারণের জন্য নমুনায়নে উন্নত ইমেজিং কৌশল প্রয়োগ করা হয়।
গবেষণা শেষে দলটি বায়ুবাহিত মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলোতে ৯টি বিভিন্ন ধরণের পলিমার এবং এক ধরণের রাবার শনাক্ত করেছেন। রাবারটির আকার ৭.১ থেকে ৯৪.৬ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়েছে। প্রতি লিটার (০.২৬ গ্যালন) মেঘের পানি পরীক্ষা করে ৬.৭ থেকে ১৩.৯ টুকরা প্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
গত বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) একটি বিবৃতিতে গবেষণার প্রধান লেখক, ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিরোশি ওকোচি সতর্ক করে বলেন, যদি 'প্লাস্টিক বায়ু দূষণ' সমস্যাটি সক্রিয়ভাবে সমাধান না করা হয়, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত ঝুঁকি বাস্তবে পরিণত হবে।এইন সমস্যা ভবিষ্যতে অপরিবর্তনীয় এবং গুরুতর পরিবেশগত ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ওকোচি আরও বলেন, যখন মাইক্রোপ্লাস্টিক উপরের বায়ুমণ্ডলে পৌঁছায় এবং সূর্যালোক থেকে অতিবেগুনী বিকিরণের সংস্পর্শে আসে, তখন তারা হ্রাস পায়।তবে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গ্রিনহাউস গ্যাস সৃষ্টিতে এটি মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটি বুধবার আরেক বিবৃতিতে গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে জানায়, পরিবেশে বিদ্যমান থাকা এসব মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো মানুষ এবং প্রাণী সবাই গ্রহণ করছে। শ্বাসের মাধ্যমে এ ক্ষতিকর উপাদান শরীরে প্রবেশ করে এবং ফুসফুস, হৃদপিণ্ড, রক্ত, প্লাসেন্টা এবং মল এর মতো একাধিক অঙ্গে শনাক্ত করা হয়েছে যেসব স্থানে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা তৈরি করে।
গবেষণার ফলাফল বলছে, এই প্লাস্টিকের দশ মিলিয়ন টন বিট সমুদ্রে শেষ হয়। সমুদ্র স্রোত থেকে পানিচক্র প্রক্রিয়ায় মেঘে জমা হয়।এই প্রক্রিয়ায় মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো মেঘের একটি অপরিহার্য উপাদান হয়ে উঠে।এ্ই প্লাস্টিক বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে আমাদের খাবার এবং পানীয় প্রায় সবকিছুই দূষিত হয়।পরিবেশগত ক্ষতি ছাড়াও হৃদপিণ্ড এবং ফুসফুস জটিলতা তৈরি করতে পারে পাশাপাশি ক্যান্সার সৃষ্টিতেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।