চীনের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চীনকে ‘আয়রন ব্রাদার’ আখ্যায়িত করে অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার। গত রবিবার (১ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এবং দেশটির নাগরিকদের অভিনন্দন জানান তিনি।
এ সময় তিনি ভূরাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক বিভিন্ন দিক তুলে ধরে সবসময় চীনের পক্ষে থাকার কথা বলেন। বেইজিংকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ইঞ্জিন বলে অভিহিত করেন। চীনের যাবতীয় অর্জনের জন্য পাকিস্তান গর্বিত বলেও জানান তিনি।
পাকিস্তান সংবাদমাধ্যম অনলাইন জিও নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
পাকিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুর্তজা সোলাঙ্গিও এক ভিডিও বার্তায় চীনের জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, চীনের জাতীয় দিবসের উৎসবে পাকিস্তান অভিনন্দন জানায়।এখন এবং ভবিষ্যতে সকল পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে এবং এতে পাকিস্তান এবং বিশ্বের জন্য শান্তি ও অগ্রগতি আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
পাকিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানিও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং দেশটির নাগরিকদের প্রতি উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক্সের এক পোস্টে তিনি জানান, সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং গর্বিত জাতি হিসেবে চীনের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় পাকিস্তান। চীন-পাকিস্তান বন্ধুত্বকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আশাও প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে গত সপ্তাহে বেইজিংয়ে বেলুচিস্তানের প্রেস কোরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নং রং। তিনি বলেন, পাকিস্তান এবং চীন পরস্পরের উপকারভোগী এবং পারস্পরিক সহযোগিতা দীর্ঘদিনের। এতে পাকিস্তানের সব মানুষ সুবিধা পাবেন।
এদিকে পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্ককে ‘লৌহকঠিন বন্ধুত্ব’ উল্লেখ করে চীনের শীর্ষ কূটনীতিক বলেছেন, দুই দেশ সব সময় একে অন্যকে সমর্থন করছে। কঠিন সময়ে একত্রিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে চীন দেশটিকে ঋণ সুবিধা দিচ্ছে। চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষে কমপক্ষে ২৪০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েছে চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়না। পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারি এই প্রসঙ্গে এক্স বার্তায় বলেন, ওই ব্যাংক এই অর্থ দুই বছরের জন্য দিয়েছে। ২০২৪ অর্থবছরে দেবে ১২০ কোটি ডলার। বাকি অর্থ ২০১৫ অর্থবছরে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিয়ে এ সপ্তাহে নিউইয়র্কে ছিলেন কাকার। এ সময়ে তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে একটি সাক্ষাৎকার বলেছেন, বৃহত্তর শক্তির প্রতিযোগিতায় কোনো পক্ষ নেয়া ছাড়াই পাকিস্তান তার নিজের স্বার্থের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে। চীনকে প্রতিহত করার বিষয়ে পশ্চিমারা খুব বেশি আচ্ছন্ন রয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়ে পাকিস্তান নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করছে। চীন হলো তার সর্ব অবস্থায় বন্ধু এবং কৌশলগত অংশীদার।
কাকার আরও বলেন, এটা কোনো স্নায়ুযুদ্ধ নয়।পাকিস্তান এক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশ, রাশিয়া এবং চীনের প্রতিযোগিতা এড়িয়ে চলবে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যে বিরোধ তাতে কোনো পক্ষেই যুক্ত হতে চায় না পাকিস্তান।কিন্তু সবধরনের পরিস্থিতিতেই চীনের সাথে সুম্পর্ক এবং গভীর বন্ধুত্ব রাখতে চায়।