পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান এবং ভাইস-চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশিকে বুধবার (৪ অক্টোবর) সাইফার মামলায় তলব করেছে দেশটির অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে গঠিত বিশেষ আদালত।
খবরটি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তানভিত্তিক বার্তা সংস্থা জিও নিউজ। বিচারক আদিয়ালা জেল সুপারকে বুধবার ইমরান এবং কুরেশিকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিশেষ আদালতের বিচারক আবুল হাসনাত জুলকারনাইন বিবাদীদের নোটিশ জারি করে বলেছেন, সাক্ষীদের বক্তব্যই অভিযুক্তকে আদালতে তলব করার জন্য যথেষ্ট।
ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে সাইফার মামলায় চার্জশিট জমা দেওয়ার দুই দিন পরে আদালতের ওই নির্দেশ আসলো।
এফআইএ তাদের চার্জশিটে ইমরান খান এবং শাহ মাহমুদ কুরেশিকে ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে আদালতকে বিচার শুরুর এবং সাজা দেওয়ার অনুরোধ করেছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, পিটিআইয়ের সাবেক মহাসচিব আসাদ উমরের নাম অভিযুক্তদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কিন্তু, ইমরান খানের সাবেক প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি আজম খানকে ওই মামলায় শক্তিশালী সাক্ষী হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এফআইএ তাদের চার্জশিটের সঙ্গে ১৬১ এবং ১৬৪ ধারার অধীনে রেকর্ড করা আজম খানের জবানবন্দীও সংযুক্ত করেছে বলে জানা গেছে।
জিও নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য নিজের কাছে রেখে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার অপব্যবহার করেছেন।
সূত্রের খবর, ইমরানের কাছে সাইফারের একটি কপি ছিল। তবে তিনি তা ফেরত দেননি। সংস্থাটি ২০২২ সালের ২৭ মার্চ মাসে দেওয়া ইমরান এবং কুরেশির বক্তৃতার প্রতিলিপিও সংযুক্ত করেছে।
ওই বক্তৃতায় পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী একটি চিঠি দেখিয়ে দাবি করেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় তার সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল।
এফআইএ তাদের চার্জশিটে ২৮ জন সাক্ষীর একটি তালিকা আদালতে জমা দিয়েছে। সূত্র জানায়, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব আসাদ মজিদ, সোহেল মেহমুদ এবং তৎকালীন অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ফয়সাল নিয়াজ তিরমিজির নামও ওই সাক্ষীর তালিকায় রয়েছে।
পাকিস্তানভিত্তিক এআরওয়াই নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) গত শনিবার ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) জমা দেওয়া চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করে সাইফার মামলার তদন্তের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর জারি করা এক বিবৃতিতে, পিটিআই মুখপাত্র পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান এবং ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কুরেশির বিরুদ্ধে জমা দেওয়া চার্জশিটকে সাইফার কেস হিসাবে অর্থহীন এবং জাল বলে অভিহিত করেছেন।
এদিকে, বিশেষ আদালত গত ২৬ সেপ্টেম্বর সাইফার মামলায় পিটিআই চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের বিচার বিভাগীয় রিমান্ড ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
অন্যদিকে, ইমরান খানের অপসারণের পর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এনএসসির একটি সভা আহ্বান করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন যে, ইমরানের সরকারের
উৎখাতের নেপথ্যে তারা বিদেশী ষড়যন্ত্রের বিষয়ে কোনও প্রমাণ পাননি।
এরপরে, দুটি অডিও ফাঁস জনসাধারণকে হতবাক করেছিল যেখানে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসাদ উমর এবং তৎকালীন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি আজম খানকে সাইফার নিয়ে আলোচনা করতে শোনা যায়।