উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের প্রতি মস্কো তার পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
এক সরকারি সফরে উত্তর কোরিয়ায় থাকা লাভরভও ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সমর্থনের জন্য দেশটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তার সফর দেশটিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্ভাব্য সফরের মঞ্চ তৈরি করবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য রাশিয়ার কাছে অস্ত্রের বড় চালান পাঠাতে শুরু করেছে উত্তর কোরিয়া।
ল্যাভরভের দুই দিনের সফর গত সেপ্টেম্বরে কিমের দিনব্যাপী রাশিয়া সফরের অনুসরণে বলে জানা গেছে। সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন কিম।
এর আগে গত জুলাই মাসে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীও উত্তর কোরিয়া সফর করেছিলেন এবং তাকে হাওয়াসং আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ দেশের সর্বাধুনিক অস্ত্র দেখানো হয়েছিল।
এক আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনায় বুধবার (১৯ অক্টোবর) কিমের জন্য মস্কোর সম্পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন লাভরভ। তিনি এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের রাশিয়ান ফেডারেশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার অভিযোগ তুলে ধরেন।
তবে, ২০১৮ সালে পিয়ংইয়ংয়ে তার শেষ সফরের মতো ল্যাভরভ তার বর্তমান সফরে কিমের সঙ্গে দেখা করবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
এদিকে, ওয়াশিংটন এর আগে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল যে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য পিয়ংইয়ং থেকে অস্ত্র কিনছে মস্কো এবং উত্তর কোরিয়া থেকে যেকোনও সাহায্য গ্রহণ জাতিসংঘের প্রস্তানের লঙ্ঘন হবে।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র গোয়েন্দা তথ্য এবং প্রমাণ প্রকাশ করে বলেছে, রাশিয়ায় গোলাবারুদ এবং কামান স্থানান্তর ইতিমধ্যেই শুরু করেছে পিয়ংইয়ং।
স্যাটেলাইট চিত্রগুলো দেখাচ্ছে যে, গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে উত্তর কোরিয়ার নানজিন বন্দর থেকে রাশিয়ার পূর্ব উপকূলে ৩০০টি কন্টেইনার পাঠানো হয়েছিল এবং তারপরে ইউক্রেনীয় সীমান্তের কাছে টিখোরেটস্কের কাছে একটি সামরিক গুদামে ওই কন্টেইনার পাঠানো হয়েছিল।
অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বিবিসিকে বলেছেন, রাশিয়ান অস্ত্র ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ার কারণে মস্কো উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রের প্রতি আগ্রহী হবে।
কিছু বিশ্লেষক বিশ্বাস করেন যে, গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার সঙ্গে কথিত অস্ত্র চুক্তির সময় কিম মানবিক সহায়তা চেয়েছিলেন। তবুও, কেউ কেউ মনে করেন যে, পিয়ংইয়ং তাদের সম্পদের আপেক্ষিক অভাবের কারণে খুব বেশি গোলাবারুদ হস্তান্তর করতে অনিচ্ছুক হতে পারে।
গত ছয় মাসে উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়া-উভয়ই একে অপরের সাথে সম্পর্ক গভীর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কারণ, উভয় দেশই বিশ্ব মঞ্চে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।