ইউক্রেনের সবচেয়ে সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তার দাবি বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) অস্বীকার করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের ওই সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন যে, দুই বছরের সংঘাতে ফ্রন্টলাইন অচলাবস্থায় পৌঁছেছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘না, রাশিয়া বাহিনী অচলাবস্থায় পৌঁছেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া স্থিরভাবে বিশেষ সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং যেসব লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিল, তা পূরণ করবে মস্কো।’
ব্রিটিশ মিডিয়ায় ইউক্রেনের জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনির একটি সাক্ষাত্কারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে পেসকভ এসব কথা বলেন।
জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি ওই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘উভয় পক্ষই ফ্রন্টলাইনে একটি অচলাবস্থায় পৌঁছেছে।’
তিনি ইকোনমিস্টকে বলেন, ‘প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মতোই আমরা এমন স্তরে পৌঁছেছি যা আমাদের একটি অচলাবস্থার মধ্যে ফেলেছে। সম্ভবত দ্রুত কোনও অগ্রগতি হবে না।’
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন বাহিনী চলতি বছরের শুরুতে রুশ অবস্থানের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করলেও সীমিত লক্ষ্য অর্জন করেছে।
রাশিয়া বাহিনী চলতি বছরের শুরুর দিকে তাদের আক্রমণে সীমিত অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনীয় শহর আভদিভকাকে পুরোপুরি ঘেরাও করার জন্য একটি নতুন প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের এক সামরিক মুখপাত্র এর আগে বলেছিলেন, শিল্প কেন্দ্রে রাশিয়ার আক্রমণ হ্রাস পেয়েছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত বছর পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল তাদের উপর সম্পূর্ণ সামরিক নিয়ন্ত্রণ না থাকা সত্ত্বেও তাদের সংযুক্তির ঘোষণা দেন।
এদিকে, ইউক্রেনের সম্ভাব্য বিমান হামলার আশঙ্কায় ক্রিমিয়ার বন্দর শহর সেভাস্তোপলে বুধবার (১ নভেম্বর) সতর্কতা জারি করেন রাশিয়ার কর্মকর্তারা।
সেভাস্তোপলে বুধবার ভোরে শহরে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে। এ সময় ক্রিমিয়া সেতুতে যান চলাচল বন্ধ করার পাশাপাশি সমুদ্র পথে পরিবহনও স্থগিত করা হয় বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
ক্রিমিয়া এবং এর আশেপাশে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের হামলার সিরিজ হামলার মধ্যে ওই সতর্কতা জারি করা হয়।
এদিকে, উপদ্বীপটিতে রাশিয়ার একটি বিমান ঘাঁটি এবং সেভাস্তোপলে কৃষ্ণসাগরে একটি নৌবহরের কমান্ড পোস্টে সফল হামলা চালানোর দাবি করেছে করেছে কিয়েভ বাহিনী।
অন্যদিকে, ইয়াল্টায় রুশপন্থী রাজনীতিবিদ ওলেগ সারিয়ভকে হত্যার চেষ্টার জন্য মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেছে রাশিয়া।
ইউক্রেন আশা করে যে, কৃষ্ণসাগরে রাশিয়া বাহিনীকে দুর্বল করতে পারলে সেটা যুদ্ধে তাদের চূড়ান্ত বিজয় এনে দেবে।
এনডিটিভি জানিয়েছে ক্রিমিয়ায় হামলার পর জেলেনস্কি বলেছিলেন, ‘রাশিয়ার নৌবহরটি আর কৃষ্ণসাগরের পশ্চিম অংশে কাজ করতে সক্ষম নয় এবং ক্রিমিয়া থেকে ধীরে ধীরে পালিয়ে যাচ্ছে তারা। এটি একটি ঐতিহাসিক অর্জন।’
আক্রমণগুলো কিয়েভের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান সক্ষমতাকে তুলে ধরেছে, যার মধ্যে সামুদ্রিক ড্রোন রয়েছে। যদিও মস্কো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং আক্রমণকারী ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনের উপর বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।
গত সপ্তাহে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল যে, সেভাস্তোপল উপসাগরে ইউক্রেনের তিনটি মানবহীন সামুদ্রিক ড্রোন আটক করেছে তারা।
ইউক্রেন বলেছে, রাশিয়া গত ২৪ ঘন্টায় ১০০ টিরও বেশি বসতিতে গোলাবর্ষণ করেছে।