রাশিয়া অধিকৃত দক্ষিণে ইউক্রেনের গোলাবর্ষণে নিহত ৯

ইউরোপ, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম | 2023-11-04 16:35:06

ইউক্রেনের দক্ষিণ খেরসন অঞ্চলের রাশিয়া-অধিকৃত অংশে কিয়েভ বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৯ জন নিহত এবং একই সংখ্যক আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে অঞ্চলটির রাশিয়া-প্রতিষ্ঠিত কর্তৃপক্ষ।

ওই অঞ্চলের মস্কো-নিযুক্ত গভর্নর ভ্লাদিমির সালদো আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, আঞ্চলিক রাজধানী খেরসন থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের শহর চ্যাপলিনকাতে গতকাল শুক্রবার (৩ নভেম্বর) একটি কর্মসংস্থান কেন্দ্রে হামলা হয়েছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সালদোকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত নিহত ৯ জনকে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে বের করে আনা হয়েছে।

মস্কো সমর্থিত কর্মকর্তা কনস্ট্যান্টিন বাসিউক স্থানীয় পেনশন অফিস এবং চাকরি কেন্দ্রসহ চ্যাপলিনস্কির বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলার জন্য কিয়েভকে অভিযুক্ত করেছেন।

যদিও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা এবং মিডিয়া ওই হামলার বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করেনি।

প্রসঙ্গত, রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে তার পূর্ণ-স্কেল আগ্রাসন শুরু করার পরপরই খেরসন অঞ্চলটি দখল করে।

শুক্রবারের হামলাগুলো এমন সময় আসলো, যখন রাশিয়ান বাহিনীর কাছ থেকে অঞ্চল পুনরুদ্ধারের জন্য পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে ইউক্রেন।

এদিকে, ইউক্রেনে সরবরাহ করা কিছু পশ্চিমা অস্ত্র অবৈধ অস্ত্রের বাজারের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে এবং তালেবানদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে বলে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) দাবি করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

পুতিন বলেন, ‘তারা বলছে ইউক্রেন থেকে অস্ত্র মধ্যপ্রাচ্যে আসছে। অবশ্যই সেগুলো বিক্রি হচ্ছে বলেই তারা বলছেন। তালেবানদের কাছে ওই সব অস্ত্র বিক্রি করা হচ্ছে।’

এনডিটিভি জানিয়েছে, গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে সেনা প্রেরণের পর থেকে পশ্চিমা শক্তিগুলো রাশিয়ার সেনাদের পরাজিত করার প্রয়াসে ইউক্রেনকে কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র পাঠিয়েছে।

ইউক্রেন দাবি করেছে যে, পশ্চিমাদের সরবরাহ করা অস্ত্রের উপর তারা কঠোর নিয়ন্ত্রণ রাখছে।

কিন্তু, কিছু পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ওই অস্ত্রে রক্ষনাবেক্ষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দুর্নীতির ইস্যু মোকাবিলার জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলেছে।

২০২২ সালের জুনে ইন্টারপোলের প্রধান জার্গেন স্টক সতর্ক করেছিলেন যে, ইউক্রেনে পাঠানো কিছু উন্নত অস্ত্র অপরাধ গোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে।

অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা সম্পর্কে গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ এক প্রতিবেদনে গত মার্চ মাসে বলেছিল, ‘প্রতিটি নজির এই পরামর্শ দেয় যে, যদি হুমকিটি সক্রিয়ভাবে মোকাবিলা করা না হয়, তবে যুদ্ধ শেষে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রগুলো নৈরাজ্যের কেন্দ্র উঠতে পারে, যেটি আফ্রিকার বিদ্রোহী থেকে ইউরোপের রাস্তার গ্যাংস্টার পর্যন্ত সবাইকে সশস্ত্র করতে পারে।’

কিয়েল ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আটটি বৃহত্তম পশ্চিমা দাতারা ইউক্রেনকে কমপক্ষে ৮৪ বিলিয়ন ইউরোর সামরিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার মধ্যে মিমি হাউইটজার, ১০৯ ব্র্যাডলি ফাইটিং যান, ১১১ মিলিয়নেরও বেশি রাউন্ড ছোট অস্ত্র গোলাবারুদ এবং ৩৮টি উচ্চ গতিশীল আর্টিলারি রকেট সিস্টেম অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর