ভারতে আটকে থাকা ৪০ শ্রমিকের উদ্ধার কাজ ব্যাহত

ভারত, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-11-18 14:21:39

শনিবার (১৮ নভেম্বর) ঘটনার ৭ম দিনেও ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে নির্মাণাধীন টানেলের একটি অংশ ধসে পড়ে রাস্তার সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪০ শ্রমিককে উদ্ধার করতে পারেনি উদ্ধারকারীরা।

শুক্রবার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খননযন্ত্র দিয়ে সুড়ঙ্গের মুখে আটকে থাকা পাথর সরানোর সময় ফাটল ধরার বিকট শব্দ শোনা যায়। তারপরই বন্ধ করে দেওয়া হয় উদ্ধারকাজ।

সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলেছেন, দীর্ঘসময় ধরে টানা উদ্ধার প্রচেষ্টা চলছে। এখন এই ফাটল আরেকটি নতুন চ্যালেঞ্জ যোগ করেছে।

উদ্ধারকারীদের ধারণা, সুড়ঙ্গের ভেতরে আরও একটি ধস নেমেছে। এর মধ্যে উদ্ধারকাজ চালিয়ে নিয়ে গেলে আরও ধস নামতে পারে।

কন্ট্রোল রুমের একজন অফিসার বিজয় সিং বলেছেন, শনিবারের পরে একটি নতুন মেশিন দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। তখন উদ্ধারকারীদের আবার খনন শুরু করার অনুমতি দেওয়া হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা দেবেন্দ্র পাটওয়াল  জানিয়েছে,  বৃহস্পতিবার ধ্বংসস্তূপ এবং ধ্বংসাবশেষের মধ্যে খনন শুরু করেছে এবং এখন পর্যন্ত ২৪ মিটার (৭৯ ফুট) প্রসারিত করেছে।

আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করার জন্য ৬০ মিটার (১৯৭ ফুট) পর্যন্ত প্রয়োজন খননের প্রয়োজন হতে পারে বলে শুক্রবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান তিনি।

ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের ডিরেক্টর তরুণ কুমার বৈদ্য বলেন, উদ্ধারকারীরা শুক্রবার রাতে ড্রিলিং শেষ করার এবং একসাথে ঢালাই করা পাইপের একটি এস্কেপ টানেল তৈরি করার আশা করেছিলেন। কিন্তু সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে জোরে ফাটল ধরার আওয়াজ আসার পর উদ্ধার প্রচেষ্টায় বিঘ্ন ঘটে।

কিছু শ্রমিক বুধবার জ্বর ও শরীরে ব্যথা অনুভব করলেও কর্মকর্তারা বলেছেন তাদের অবস্থার কোনো অবনতি হয়নি। বাদাম, ভাজা ছোলা, পপকর্ন ও ওষুধ প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর পাইপের মাধ্যমে তাদের কাছে পাঠানো হচ্ছে।

পাটওয়াল বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে দুজন চিকিৎসক আটকে পড়া শ্রমিকদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। আমরা আটকে পড়া শ্রমিকদের হার্টবিট উচ্চ রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি কারণ উদ্ধারকারীদের পাশাপাশি আটকে পড়া ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি কঠিন সময়।

শ্রমিকদের নিরাপদে উদ্ধার করে আনতে থাইল্যান্ড এবং নরওয়ের দু’টি সংস্থাকেও ডেকে পাঠিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ১৬৫ জন সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। রয়েছেন জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ইন্দো টিবেটান পুলিশ এবং বর্ডার রোডওয়েজের বাহিনী। জানা গিয়েছে, ধসে যাওয়া সুড়ঙ্গে আটকে আছেন পশ্চিমবঙ্গের তিন শ্রমিক।

উল্লেখ্য, রোববার (১২ নভেম্বর) ভোর ৪টায় টানেলের ভেতরে ধসের ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকজন শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন। সেই সময় হঠাৎ সুড়ঙ্গের কাঠামো ভেঙে পড়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েন ৪০ জন শ্রমিক। এক সপ্তাহেও তাদের উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়নি।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর