ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে তিন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। কিন্তু তাতে বিতর্ক কমেনি।
বরং সে দেশের বিরোধী নেতাদের সম্মিলিত তোপের মুখে পড়েছেন চীনপন্থী মুইজ্জু। এমনকি, তাকে বরখাস্ত করার জন্য পার্লামেন্টে বিরোধী নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আনতে পারেন বলেও শোনা গেছে।
গত সপ্তাহে মুইজ্জু সরকারের তিন মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের পরেই মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট তথা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা ইব্রাহিম সোলি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।
দেশটির আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাসিদও প্রতিবাদ করেছিলেন মোদি অবমাননার বিরুদ্ধে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান ফয়াজ ইসমাইল মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) প্রকাশ্যে পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতা মুইজ্জুকে দুষে ভারতের সঙ্গে ‘সম্পর্কের ক্ষত’ ঠিতঠাক ডাক দিয়েছেন।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু সোমবার থেকে পাঁচ দিনের সফরে চীন গেছেন। তারই মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে।
মালদ্বীপের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিয়া আহমেদ দিদি সরাসরি মালে-নয়াদিল্লি সম্পর্ক নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছেন মুইজ্জুর বিরুদ্ধে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুইজ্জুর দল পিপল্স ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতাদেরও তার সমর্থনে মুখ খুলতে দেখা যাচ্ছে না তেমন।
তিন মন্ত্রীর মোদি-বিরোধী মন্তব্যের পরেই গত সোমবার মালদ্বীপের পার্লামেন্টের বিরোধী নেতা আলি আজিম নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘আমরা চাই দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক এবং কোনও প্রতিবেশী দেশকে কোণঠাসা করার চেষ্টা বন্ধ হোক।’
তারপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, প্রেসিডেন্ট পদে থাকার মতো যোগ্যতা মুইজ্জুর রয়েছে কি না। এর পাশাপাশি তিনি প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তোলেন।
ডেমোক্র্যাটিক দলের আর এক নেতা মিকাইল নাসিম আবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তলব করে কৈফিয়ত চাওয়ার জন্য পার্লামেন্টকে অনুরোধ করেছিলেন।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, গত সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘চীনপন্থী’ নেতা মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা নিয়ে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন মোদি। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিও সামাজিত যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
অভিযোগ রয়েছে, মালদ্বীপের তিন মন্ত্রী, মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাহজুম মাজিদ কিছু ছবিতে মোদিকে ‘পুতুল’ এবং ‘জোকার’ বলে মন্তব্য করেন। ভারত-ইজরায়েল সম্পর্ক নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়।
পরে অবশ্য বিতর্কের মুখে পোস্টগুলো মুছে দেওয়া হয়। চাপের মুখে রবিবার সাসপেন্ড করা হয় ওই তিন মন্ত্রীকে।