ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) হামাসের যুদ্ধবিরতির দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির দাবি প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি গাজার দক্ষিণে রাফাহ শহরে ইসরায়েলের সেনাদের অগ্রসর হওয়ার প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রাফাহ’তে দশ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু আশ্রয় নিয়েছে বলা গেছে।
নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাতের কয়েক ঘণ্টা পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তেল আবিবে এক বক্তৃতায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, তিনি এখনও চুক্তিতে পৌঁছানোর সুযোগ দেখেছেন।
তিনি ইসরায়েলি নেতাকে এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছেন, এতে করে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে।
নেতানিয়াহু একটি টেলিভিশন ব্রিফিংয়ে বলেছেন, তিনি রাফাতে সেনাদের অভিযানের প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সম্পূর্ণ বিজয় মাত্র কয়েক মাস দূরে।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘যুদ্ধবিরতির জন্য হামাসের অদ্ভুত দাবি মেনে নেওয়া জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দিকে পরিচালিত করবে না, বরং এটি কেবল আরেকটি গণহত্যাকে আমন্ত্রণ জানাবে।’
এদিকে বৈরুতে হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ‘নেতানিয়াহুর আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জোর দেওয়া সম্পূণরূপে নিশ্চিত করে যে, এর লক্ষ্য ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানো।’
হামাসের কর্মকর্তা ওসামা হামদান, সকল প্রতিরোধ গোষ্ঠীকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার এবং ইসরায়েলি সংঘর্ষের শেষ পর্যায়ে বিশ্বাসঘাতকতা থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, গত বছরের নভেম্বরে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের মধ্যে একজন ইসরায়েলি নেতার উপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে তেল আবিবে এক সংবাদ সম্মেলনে আদিনা মোশে বলেন, ‘সবকিছুই আপনার হাতে।’
তিনি বলেছিলেন, ‘আমি খুব ভীত এবং উদ্বিগ্ন যে, আপনি যদি হামাসকে ধ্বংস করার মনমানসিকতা পরিহার না করেন, তাহলে মুক্তির জন্য কোনও জিম্মিই আর অবশিষ্ট থাকবে না।’
এরআগে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তার পঞ্চম মধ্যপ্রাচ্য সফরে একটি যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তির জন্য আশা প্রকাশ করেছিলেন। এমনকি তিনি সতর্ক করেছিলেন যে, ‘অনেক কাজ করতে হবে।’
মধ্যস্থতাকারী মিশরের একজন কর্মকর্তা এএফপি’কে বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকায় শান্তি অর্জনের লক্ষ্যে নতুন দফা আলোচনা বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) কায়রোতে শুরু হবে।’
বিষয়টি সম্পর্কে হামাসের একটি সূত্র জানিয়েছে, হামাস একটি যুদ্ধবিরতি, যুদ্ধের অবসান এবং একটি বন্দী বিনিময় চুক্তির লক্ষ্য নিয়ে কায়রোতে আলোচনায় সম্মত হয়েছে।
গত সপ্তাহে হামাসের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাাবিত নতুন যুদ্ধবিরতিতে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি-বন্দি বিনিময়ের পাশাপাশি গাজার জন্য আরও সহায়তার আহ্বান জানানো হয়েছে। তারপর থেকে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
ব্লিঙ্কেন গাজায় আরও সাহায্যের জন্য নতুন করে আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সেখানে ২৪ লাখ মানুষ কঠোর অবরোধের মধ্যে এবং বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য, জ্বালানী এবং চিকিৎসা সরবরাহের তীব্র সংকটের সঙ্গে লড়াই করছে।