রাফাহতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

মধ্যপ্রাচ্য, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম | 2024-02-09 17:29:10

গাজার দক্ষিণে রাফাহ শহরে শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।

এর আগেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইসরায়েলি বাহিনীকে গাজা উপত্যকার শেষ বড় শহর রাফাতে অভিযানের জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তবে, রাফাহ শহরে বিমান হামলা শুরু হলেও ইসরায়েলি স্থল সেনারা এখনও শহরটিতে প্রবেশ করেনি।

ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বলেছে, ‘রাফাহতে একটি স্থল আক্রমণকে সমর্থন করে না ওয়াশিংটন।’

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘যদি সঠিকভাবে পরিকল্পনা না করা হয়, তাহলে এমন একটি শহরে এই ধরনের অভিযান দশ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিকে বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে ফেলবে।’

রাফহতে বিমান হামলার আগে বাইডেন বলেছিলেন, ‘গত ৭ অক্টোবরের হামাসের আক্রমণের বিপরীতে ইসরায়েলের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছিল অত্যধিক এবং এটি বন্ধ করা উচিত।’

তিনি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, গাজায় ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া শীর্ষে পৌঁছেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক নিরপরাধ মানুষ আছে যারা ক্ষুধার্ত। অনেক নিরপরাধ মানুষ যারা সমস্যায় পড়েছে এবং মারা যাচ্ছে এবং এটি বন্ধ করা উচিত।’

এদিকে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সতর্ক করে বলেছে, খাদ্যের অভাবে উত্তর ও মধ্য গাজায় কয়েক লাখ মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, দুই সপ্তাহেরও বেশি আগে গত ২৩ জানুয়ারি সংস্থাটিকে শেষবার এই অঞ্চলে খাদ্য সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

মানবিক সহায়তা প্রদানকারী অন্যান্য সংস্থাগুলোও ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ত্রাণ পেতে বাধা দেওয়ার কথা জানিয়েছে।

লাজারিনি এক্স-এ লিখেছেন, ‘বছরের শুরু থেকে উত্তরে আমাদের সাহায্য মিশনের সহায়তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ সংস্থা উত্তর গাজাকে অনাহার এবং ক্ষুধার গভীর সংকট এলাকা চিহ্নিত করেছে। কারণ, সেখানে মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।’

লাজারিনি আরও বলেন, ‘এ অঞ্চলে বসবাসকারী অন্তত ৩ লাখ মানুষ তাদের বেঁচে থাকার জন্য আমাদের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।’

গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ বিষয়ক পরিচালক থমাস হোয়াইট বলেছেন, ‘রাফাহতে আক্রমণাত্মক অভিযান নিয়ে এখন চরম উদ্বেগ রয়েছে। এখান থেকে সংস্থাটি পুরো গাজা উপত্যকার জন্য তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।’

তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমাদের যদি রাফাহ থেকে সরে যেতে হয় তাহলে সাহায্য কার্যক্রম পরিচালনা করা খুবই কঠিন হবে। আমরা এখনই জনগণের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘যদি নতুন করে হাজার হাজার লোক আবার দক্ষিণে সরে যায়, তবে তাদের সাহায্য করার মতো সামর্থ্য আমাদের নেই এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে থাকা শহর থেকে আমাদের কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে না।’

দক্ষিণে সরে যাওয়া সত্ত্বেও অনেকে ওয়াদি গাজা, গাজার কেন্দ্রে এবং উত্তরে রয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।

গাজায় জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ-এর প্রধান জর্জিওস পেট্রোপোলোস বলেছেন, ‘এই অঞ্চলটিকে ক্ষুধা ও হতাশার মরুভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে’।

তিনি গত বুধবার এএফপিকে বলেন, ত্রাণ সংস্থাগুলোকে অবরুদ্ধ করা হচ্ছে, যখন কিছু ট্রাক এদিক দিয়ে যাচ্ছে, সেগুলোকে বাসিন্দারা ঘিরে ধরছে। উত্তর গাজার এসব এলাকা অনাহারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর