রাশিয়ার কারাগারে বন্দি অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টোর সমালোচক ও বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির (৪৭) আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে। নাভালনি আর্কটিক সার্কেল থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের একটি নির্জন কারাগারে ছিলেন।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রুশ কারা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
এক বিবৃতিতে ইয়ামালো-নেনেটস জেলার কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার হাঁটার পরে হঠাৎ নাভালনি অসুস্থ বোধ করেন। অসুস্থ বোধ করার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এমন অবস্থায় তাৎক্ষণিক জরুরি মেডিকেল টিমকে ডাকা হয়। তারা এসে চেষ্টা করলেও নাভালনিকে বাঁচাতে পারেননি।
রুশ সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, এরইমধ্যে নাভালনির মৃত্যুর বিষয়টি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবহিত করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ খুঁজে করতে তদন্ত হচ্ছে।
নাভালনির সমর্থকদের দাবি, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচনা বন্ধ করতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নাভালনিকে গ্রেফতার ও কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
২০২০ সালের ২০ আগস্ট সাইবেরিয়ার টমসক শহর থেকে মস্কো যাওয়ার পথে উড়োজাহাজে অসুস্থ হয়ে পড়েন নাভালনি। তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি সাইবেরিয়ার ওমস্কে জরুরি অবতরণ করে। সেখানকার একটি হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য জার্মানির বার্লিনে নেয়া হয়। সেখানে তিনি ধীরে ধীরে সেরে ওঠেন।
জার্মানির চিকিৎসকরা জানান, নাভালনিকে নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগ করা হয়েছে বলে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। ফ্রান্স ও সুইডেনের পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করেও নাভালনিকে বিষ প্রয়োগের প্রমাণ মিলেছে।
নাভালনির দলের অভিযোগ, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে তাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে, বিষ প্রয়োগের এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ক্রেমলিন। একই সঙ্গে রাশিয়ার দাবি, তাদের চিকিৎসকরা বিষের উপস্থিতি পাননি। নাভালনির ওপর রাসায়নিক প্রয়োগের ব্যাপারে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিল জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
ক্রেমলিনের হুমকি উপেক্ষা করে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশে ফেরেন নাভালনি। এতে বিমানবন্দরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরের মাসেই অর্থ আত্মসাতের পুরোনো একটি মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়।