সীতার সঙ্গে আকবরকে না রাখতে হাইকোর্টে মামলা

ভারত, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-02-17 21:49:40

সম্প্রতি ত্রিপুরার সিপাহিজলা জুলজিক্যাল পার্ক থেকে একটি সিংহ ও সিংহীকে আনা হয়েছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির শিলিগুড়ি সাফারি পার্কে। প্রাণী দুটিকে এক ঘরে রাখা হলেও তাদের নাম নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। যা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। গতকাল শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে এমন এক আবেদন জনসম্মুখে এসেছে, যা পশ্চিমবঙ্গসহ দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

সিংহের নাম আকবর আর সিংহীর নাম সীতা। ষোড়শ শতাব্দীতে জালালউদ্দিন মহম্মদ আকবর ছিলেন মোগল সাম্রাজ্যের সবচেয়ে সফল সম্রাট। আর সীতা, যিনি রামায়ণে হিন্দুদের দেবতা রামচন্দ্রের স্ত্রী। 

'আকবর'-এর সঙ্গে 'সীতা'কে রাখা হবে হিন্দু ধর্মের অবমাননা- এমন অভিযোগ এনে ভারতের প্রধান হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) ধর্মীয় শাখা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (বিএইচপি) পশ্চিমবঙ্গ শাখা গতকাল শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে এক আবেদন করেছে। তাদের একই ঘরে রাখার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছে বিএইচপি। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।

বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের বেঞ্চের সামনে আবেদনটি উল্লেখ করা হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছে, 'আকবর' নামে একটি সিংহকে একই জায়গায় 'সীতা' নামে একটি সিংহীর সাথে রাখার ফলে হিন্দু ধর্মের অবমাননা হচ্ছে। ধর্মীয় সংগঠনটি নাম পরিবর্তনের দাবি তুলেছে। রাজ্যের বন কর্তৃপক্ষ এবং সাফারি পার্কের পরিচালককে মামলায় পক্ষ করা হয়েছে।

বিএইচপি'র অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বন বিভাগ সিংহ দুটির নামকরণ ইচ্ছাকৃতভাবে সীতা ও আকবর দিয়েছে। এতে হিন্দু ধর্মের অবমাননা এবং হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত করা হচ্ছে। তারা সিংহীটির নাম পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়েছেন।  

বন বিভাগের কর্মকর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরা সিংহ-সিংহীর নামকরণ করেননি। এই জুটিকে ত্রিপুরার সিপাহিজালা জুওলজিক্যাল পার্ক থেকে সম্প্রতি আনা হয়েছে। বিজেপি শাসিত ত্রিপুরাতেই তাদের নামকরণ করা হয়েছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি সীতা ও আকবর পশ্চিমবঙ্গে এসে পৌঁছেছে।

বিএইচপির আবেদন বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন। আগামী মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। দিল্লিতে যখন বিভিন্ন পার্ক, রাস্তা এবং অঞ্চল থেকে মোগল সম্রাটদের নাম মুছে ফেলা হচ্ছে, তখন পূর্ব ভারতের পূর্ণবয়স্ক সিংহ আর তার নাম বেশি দিন ধরে রাখতে পারবে বলে মনে হয় না। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর