যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের শহর বাল্টিমোরের ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুতে আঘাত হানার কিছুক্ষণ আগে গতিপথ পরিবর্তন করেছিল সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী জাহাজ দ্য ডালি। ওই সময় জাহাজের সব লাইটে অন্তত দু’বার আলো জ্বলে ওঠে। এরপর হঠাৎই সেটি একটি স্তম্ভে আঘাত হানে এবং মুহূর্তের মধ্যে প্রায় তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) স্থানীয় সময় রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ৩০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজটি শ্রীলঙ্কার কলম্বোর উদ্দেশে যাত্রা করেছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, কন্টেইনারবাহী সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী জাহাজের ধাক্কায় কম করে হলেও ২০ জন মানুষ ও অনেকগুলো গাড়ি নদীতে পড়ে যায়। এতে প্রচুর লোক হতাহত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবিসি সংবাদদাতা সাইমন জোন্স বলছেন, খুব বড় মাপের কোনও দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই কেবল মার্কিন কর্তৃপক্ষ সেটিকে ‘মাস ক্যাসুয়ালটি ইভেন্ট’ বলে ঘোষণা করে থাকে – ফলে এটিও ‘অত্যন্ত গুরুতর’ একটি ঘটনা, যাতে বিপুল প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
জাহাজ নিরীক্ষক ওয়েবসাইট মেরিনট্রাফিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটির আকস্মিকভাবে লাইট জ্বলে ওঠার কোনও কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাহাজটি সেতুতে কী কারণে আঘাত হেনেছে কিংবা কেন এর লাইট জ্বলছিল তা পরিষ্কার নয়।
জাহাজটির বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছিল কি না, সেই বিষয়ে জানতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহন সুরক্ষা বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। যদিও এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সুরক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, পুরো ব্রিজটাই কীভাবে ভেঙে পড়ে পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে! ঘটনার পর পরই একাধিক সংস্থা একযোগে খুব বড় ধরনের উদ্ধার অভিযানে নেমেছে।
পাটাপস্কো নদীর ওপরে অবস্থিত এই সেতুটি বাল্টিমোরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাল্টিমোর শহর ঘিরে যে ‘৬৯৫ অরবিটাল হাইওয়ে’ বা জাতীয় সড়ক রয়েছে, এই সেতুটি ছিল তারই অংশ।
সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী জাহাজ দ্য ডালি বাল্টিমোরের পোর্ট ব্রিজ বন্দর থেকে শ্রীলঙ্কার কলম্বো অভিমুখে যাচ্ছিল। বাল্টিমোরের বন্দরটি ভেঙে পড়া এই ব্রিজ থেকে বেশ কাছেই, আর স্পেশালাইজড কার্গো পরিবহনের জন্য এটি আমেরিকার বৃহত্তম বন্দরও বটে।