পাকিস্তানে আকস্মিক সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট

মধ্যপ্রাচ্য, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম | 2024-04-24 17:10:46

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। হামলা-পাল্টা হামলায় লিপ্ত দুই দেশই। সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে এই যুদ্ধে ঢুকে পড়েছে যুক্তরাষ্টও। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির আকস্মিক পাকিস্তান সফর নিয়ে সোরগোল শুরু হয়েছে বিশ্বকূটনৈতিক মহলে।

তিন দিনের সফরে পাকিস্তানে রয়েছেন ইব্রাহিম। এএনআই সূত্রে খবর, তার এই সফর সম্পর্কে ইসলামাবাদের কাছে তেমন কোনও খবর ছিল না।

এদিকে, ইরান এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়। গত জানুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। হামলা-পাল্টা হামলায় জড়িয়ে পড়ে দুই প্রতিবেশী দেশ।

গত ২৩ জানুয়ারি পাকিস্তানের বালুচিস্তানে জঙ্গি সংগঠন জইশ আল অদলের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালায় ইরান। কেন এই হামলা, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, ওই হামলার লক্ষ্য ছিল জঙ্গি সংগঠন জইশ অল অদল বা ‘আর্মি অফ জাস্টিস’-এর ঘাঁটি ধ্বংস করা।

তেহরানের দাবি ছিল, জইশ অল অদল নামক জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপ মূলত ইরান-পাকিস্তান সীমান্তজুড়ে। ওই জঙ্গি গোষ্ঠী ইরানের মাটিতে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে বলেও দাবি তোলে ইব্রাহিম সরকার। সেই কারণেই তাদের ঘাঁটি নির্মূল করতে হামলা চালানো হয়েছে পাকিস্তানের মাটিতে।

ইরানের এই দাবি মানতে নারাজ ছিল ইসলামাবাদ। পাকিস্তান সরকার দাবি করে, ইরানের হামলায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ইরানকে পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারিও দেয় ইসলামাবাদও।

পাকিস্তানের হুঁশিয়ারি যে ফাঁপা ছিল না, তার প্রমাণ মেলে দুই দিনের মধ্যেই। ইরানের উপর পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। ইরান এবং পাকিস্তানের হামলা-পাল্টা হামলার আবহে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল ধরে।

তার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। এই আবহে ইরানের প্রেসিডেন্টের আচমকা পাক সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কেন তিনি পাকিস্তানে গেলেন? এ বিষয়ে তেহরানের যুক্তি, দুই দেশের ভেঙে পড়া সম্পর্ক মজবুত করার লক্ষ্যেই এই সফর।

সোমবার (২২ এপ্রিল) ইসলামাবাদে পা রাখেন রাইসি। শুধু তিনি একা নন, এই সফরে ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রয়েছেন তার স্ত্রী। এ ছাড়াও ইব্রাহিমের সফরসঙ্গী হিসাবে রয়েছেন তার দেশের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যও। কয়েক জন ব্যবসায়ীও রয়েছেন রাইসির সঙ্গে।

সোমবারই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরীফের সঙ্গে বৈঠক করেন ইব্রাহিম। দুই প্রতিবেশী দেশের অর্থনীতি, সীমান্ত, জ্বালানি সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয় দুই নেতার মধ্যে। পাকিস্তান সরকারও ইরানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

রাইসির এই আকস্মিক সফরের নানা গুঞ্জনের মধ্যে বিশ্লেষকদের ধারণা, ইসরায়েলে আক্রমণের তেজ বৃদ্ধি করতে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে তেহরান। তারা ইসরায়েলের উপর পারমাণবিক বোমা দিয়েও হামলা চালাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই নিজেদের পারমাণবিক শক্তির ভান্ডার বৃদ্ধি করতেই প্রতিবেশী দেশের সাহায্য চাইছে ইরান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর