গত শুক্রবার (৩ মে) সকালে রায়বরেলিতে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করার পরে দুপুরে চার্টার্ড বিমানে মা সোনিয়া গান্ধী, বোন প্রিয়াঙ্কা, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং গান্ধী পরিবারের জামাই রবার্ট বঢরার সঙ্গে দিল্লি থেকে উড়ে গিয়ে মনোনয়ন পেশ করলেও অমেঠি ছেড়ে পাশের কেন্দ্রে পাড়ি জমানো নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি রাহুল গান্ধী। শনিবার (৪ মে) প্রথমবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন তিনি।
রায়বরেলীকে তার পরিবারের কাজের জায়গা উল্লেখ করে এক্স-এ একটি হিন্দি পোস্টে রাহুল লিখেছেন, ‘রায়বরেলি থেকে মনোনয়ন আমার জন্য একটি আবেগময় মুহূর্ত ছিল! আমার মা আস্থা রেখে পরিবারের কাজের দায়িত্ব আমার হাতে তুলে দিয়েছেন এবং আমাকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।’
এর পরেই রাহুল বলেন, ‘অমেঠি এবং রায়বরেলি আমার কাছে আলাদা নয়। দুটিই আমার পরিবার এবং আমি খুশি যে কিশোরি লালজি (অমেঠীর কংগ্রেস প্রার্থী কিশোরি লাল শর্মা), যিনি গত ৪০ বছর ধরে ওই লোকসভা কেন্দ্রের সেবা করছেন, তিনি অমেঠি থেকে দলের প্রতিনিধিত্ব করবেন।’
উল্লেখ্য, অমেঠি এবং রায়বরেলি-উত্তরপ্রদেশের এই দুটি লোকসভা কেন্দ্রেই আগামী ২০ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৩ মে মনোনয়ন ছিল জমা দেওয়ার শেষ দিন।
ভোটের দুই সপ্তাহ আগে রায়বরেলি এবং অমেঠির ভোটারদের উদ্দেশে রাহুল বলেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের যুদ্ধে প্রিয়জনদের ভালবাসা এবং আশীর্বাদ কামনা করছি। আমার বিশ্বাস, সংবিধান এবং গণতন্ত্র রক্ষার এই লড়াইয়ে আপনারা সকলে আমার পাশে থাকবেন।’
২০০৪ সাল থেকে টানা তিন বার লোকসভা নির্বাচনে অমেঠি কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হয়েছেন রাহুল। তবে ২০১৯ সালে ওই কেন্দ্রে বিজেপির স্মৃতির কাছে ৫৫ হাজার ভোটে হেরে যান তিনি। রাহুলের অন্য আসন, কেরালার ওয়েনাড়ের ইতিমধ্যেই ভোট হয়ে গেছে।
উত্তরপ্রদেশের কেন্দ্রবদল নিয়ে ইতিমধ্যেই তাকে রাজনৈতিকভাবে আক্রমন করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, রাহুল অমেঠিতে লড়লে ২০১৯ সালের মতোই স্মৃতি ইরানির কাছে পরাজয় অনিবার্য ছিল। সেটা বুঝতে পেরেই উত্তরপ্রদেশে গান্ধী পরিবারের একমাত্র অবশিষ্ট দুর্গ রায়বরেলিতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
রাহুলের নাম ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গাপুরের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাবেক কংগ্রেস সভাপতির পলায়নপর মানসিকতা নিয়ে কটাক্ষ করেন।
তিনি দাবি করেন, তিনি আগেই বলেছিলেন হারের ভয়ে নতুন আসন খুঁজছেন রাহুল। অন্য দিকে স্মৃতি বলেন, ‘ভোটের আগেই অমেঠিতে হার মেনেছে কংগ্রেস।’
বিজেপির কটাক্ষের জবাবে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘রায়বরেলিতে রাহুলের প্রার্থী হওয়া উত্তারধিকার নয়, দায়িত্ব এবং কর্তব্যের প্রশ্ন।’ সেই সঙ্গে বিজেপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রাহুল উত্তরপ্রদেশ থেকে তিনবার এবং কেরালা থেকে একবার সাংসদ হয়েছেন। মোদিজি কেন বিন্ধ্যের দক্ষিণ থেকে লড়ার সাহস পান না?’